দেশে করোনার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় সরকার সাত দিনের লকডাউন ঘোষনার প্রথম দিন সোমবার (৫ এপ্রিল) যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে কাছাকাছি দুরত্বের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তবে বাড়তি ভাড়ায় এসময় যাত্রীদের একমাত্র ভরসা ছিল লেগুনাসহ লক্কর-ঝক্কর ছোট আকারের ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাস।
করোনার প্রভাব আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার সারাদেশে সোমবার থেকে সাতদিনের লকডাউন ঘোষনা করে। এসময় পণ্যবাহী যানচলাচল স্বাভাবিক রাখলেও গণপরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে লকডাউনের প্রথম দিন সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল কার্যত বন্ধ ছিল।
মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের সদর দক্ষিণের সুয়াগঞ্জ, পদুয়ারবাজার, নন্দনপুর, আলেখারচর, ময়নামতি, নিমসার, কোরপাই, কাবিলা, চান্দিনা ঘুরে পাওয়া চিত্রে দেখা গেছে- সড়কজুড়ে পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি সাধারন মানুষের চলাচলও ছিল চোখেপড়ার মত। উল্লেখিতস্থানগুলো থেকে বহু মানুষকে ছুটতে দেখা গেছে বিভিন্ন গন্তব্যে। এসময় তাদের অন্যতম প্রধান ভরসা ছিল ছোট আকারের মাইক্রোবাস (মারুতি), লেগুনা। তবে একই সময় মহাসড়কে যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে ইজিবাইক, ব্যাটারীচালিত রিক্সা, লক্করঝক্করমার্কা মাইক্রোবাস, ট্রাক, মিনিট্রাক ছাড়াও দু’একটি বাস। যাত্রীদের ভাড়াও গুণতে হয়েছে নির্ধারিতের চেয়ে বেশি।
এছাড়াও মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লংভ্যাহিকেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালবাহী যানবাহনগুলোর চালকদের কাছে অনুনয়-বিনয় করে গন্তব্যে পৌঁছতে নানাভাবে সহযোগিতা চাইতে দেখা গেছে যানবাহন স্বল্পতায় দুর্ভোগের শিকার সাধারন মানুষদের।
লকডাউনের প্রথম দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কুমিল্লার আন্তঃজেলা বাসটার্মিনালগুলো থেকে স্বল্প বা দুরপাল্লার কোন যানবাহন চলাচল করেনি। ফলে অনেকেই ব্যবসা-বানিজ্য বা ব্যক্তিগত কাজে বিভিন্ন গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে বাড়ি থেকে বেড় হলেও যান সংকটের কবলে পড়তে হয়েছে। পাশাপাশি স্বল্প দুরত্বের ৫/৬ কিলোমিটার দুরত্বের গন্তব্যে পৌঁছতে ৪/৫ গুণ অতিরিক্ত বাড়া গুনতে হয়েছে।
পদুয়ারবাজারের বিশ্বরোড এলাকায় কথা হয় লালমাই এলাকার হাজী রহিমের সাথে। তিনি বলেন, আমার একজন নিকটাত্মীয় অসুস্থ রোগীকে দেখতে কয়েকদফায় গাড়ি পরিবর্তন করে এখন পদুয়ারবাজার এসেছি।
হাজী রহিমের অনেকেই এরকম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এদিকে মহাসড়কে লেগুনা, থ্রিহুইলার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও সোমবার মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে এসব যানবাহন। এছাড়াও নসিমনে করেও অনেক লোককে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, সরকার গণপরিবহন বন্ধের যে নিষেধাজ্ঞাজারী করেছে আমরা সেটা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় মহাসড়কে যাত্রীবাহীবাস, লেগুনা আটক করেছি। লকডাউনে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম