রোদের তীব্রতায় তেঁতে উঠেছে কুমিল্লার মুরাদনগরের জনজীবন। প্রতিদিন বাড়ছে দিনের তাপমাত্রা। অসহনীয় গরমের কারণে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। তীব্র গরমে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। তীব্র গরমে মুরাদনগর উপজেলাবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত।
এ ছাড়া অতি গরমে পানি শূন্যতা, ডায়েরিয়া, সর্দি গলাব্যাথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ। এই গরমে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও।
বরিবার (২১ এপ্রিল) তীব্র গরমের কারণে দুপুরের আগেই উপজেলার সদর এরিয়া সহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট যেন ফাঁকা হয়ে পড়ে। অফিস দোকানপাট ও ক্ষেত খামারেও মানুষের উপস্থিতি কমছে।
গোটা মুরাদনগর জুড়ে গরমের তীব্রতায় ছোট-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ভর দুপুরে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ছে। উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, অনেকে গরম থেকে বাঁচতে গাছতলায় বা ছায়াযুক্ত খোলামেলা স্থানে বসে আছে। পাশাপাশি লেবুর সরবত বিক্রি হওয়ায় গরমে তৃষ্ণার্ত মানুষেরা ভিড় জমাচ্ছে সেখানে। এই গরম ও তপ্ত রোদের হাত থেকে বাঁচতে ঠাণ্ডা পানির লেবুর সরবত পান করছেন অনেকেই। প্রচন্ড গরম কে কেন্দ্র করে ডাব ও তরমুজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।
এদিকে গ্রামের নদী-নালা, পুকুর ও খাল-বিলে গা ভেজাতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। গরমে এসব জায়গার পানিতে নেমে শরীর ভিজিয়ে গরম থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে অনেকেই।
রিকশা চালক সফিক মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরে যে গরম পড়ছে, জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। ঈদের পর হাতে টাকা নেই। বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। গরমের রাস্তাঘাট বলতে গেলে ফাঁকা। যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু জীবিকার টানে গরম সহ্য করে রিকশা চালাতে হচ্ছে।
কৃষক আবদুল খালেক মিয়া বলেন, প্রচন্ড গরমে আমাদের জীবন বিপর্যস্ত, তারপরেও কিছুই করার নাই। ফসলের জন্য মাঠে কাজ করতে হবে। রোদের তীব্রতার কারণে দুপুরের আগে মাঠ ছেড়ে চলে এসেছি। বিকেলে আবার মাঠে যাব।
এদিকে বৈশাখের তীব্র তাপদাহে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অধিকাংশ রোগী ডায়রিয়া, পানি শূণ্যতায় আক্রান্ত। তবে জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই গরমে এক টানা বেশি সময় কাজ করা যাবে না। এছাড়া কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হবে। কোনো অবস্থায় ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। ঘর্মাক্ত অবস্থায় গোসলও করা যাবে না। কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। অতিরিক্ত ঘাম ঝরলে স্যালাইনের পানি পান করতে হবে। বাসি-পচা খাবার পরিহার করতে হবে। তাছাড়াও ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া যাবে না।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম