কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অপহরণের ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত কিশোর উদ্ধার ও অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ। বুধবার (১৭ মে) বিকালে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ভোরে অপহৃত কিশোর মো. রোমন মিয়াকে পুলিশ উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই অপহরণকারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।

গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার দক্ষিণ পেন্নাই গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে আহমেদ মিয়া (২০) এবং একই উপজেলার তিনচিটা গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে মো. সাফিন মিয়া (২১)। অপহরণের হোতা এলাকায় মক্ষীরানি হিসেবে খ্যাত কয়েকটি অপহরণ মামলার আসামি নাসরিন আক্তার (৩৫) পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বোরকা পরে পালিয়ে যান।

বৃহস্পতিবার বিকালে দাউদকান্দি মডেল থানায় অপহৃত কিশোরের বড় ভাই আনিছ বাদী হয়ে অপহরণ মামলা দায়েরের পর অপহরণকারীদের কুমিল্লা জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও অপহৃত কিশোরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি উপজেলার ইউনুস মিয়ার ছেলে রোমন মিয়া দুপুরের খাবার খেতে গৌরীপুর বাজারে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়। এ সময় ওৎ পেতে থাকা দুই অপহরণকারী তার মুখে চেপে ধরে মোটরসাইকেলে তুলে নেন। তাকে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথমে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। ওই কিশোরের পরিবার প্রথমে ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠায়। এরপর এক লাখ টাকা দাবি করলে অপহৃত কিশোরের পরিবার বিষয়টি গৌরীপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান আসাদকে বিষয়টি অবহিত করে।

তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈশাখাঁ সিএনজি পাম্পের পাশে আবুল খায়ের দালানের দোতলা থেকে অপহৃত কিশোর রোমন মিয়াকে উদ্ধার করে এবং হাতেনাতে দুই অপহরণকারিকে গ্রেফতার করেন গৌরীপুর পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক। এ সময় অপহরণের হোতা আসামি নাসরিন আক্তার পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বোরকা পরে পালিয়ে যান।

অপহৃত কিশোর রোমন মিয়ার ভাই ও মামলার বাদী আনিছ বলেন, ‘আমার ছোট ভাই রোমন দুপুরের খাবার খেতে দোকান থেকে বের হলে পথ থেকে অপহরণকারীরা তাকে মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে যায়। আমার ভাইকে আটকে রেখে প্রথম ৫০ হাজার টাকা ও পরে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদেরকে প্রথমে ১০ হাজার টাকা বিকাশে দিই। আরো বেশি টাকা দাবি করায় বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ আমার ভাইকে উদ্ধার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক বলেন,অপহরণের ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত কিশোর রোমনকে উদ্ধার করেছি। অপহরণের সাথে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে অপহরণের হোতা কয়েকটি অপহরণ মামলার আসামি নাসরিন আক্তার পুলিশ দেখে বোরকা পরে পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপহরণ মামলা হয়েছে।