কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রায় পাঁচ মাস আগে শারমিন আক্তার (২৫) নামের এক প্রসূতির অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান ডেলিভারি হয়। এরপর চিকিৎসক রোগীর পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাইয়ের কাজ সারেন।
পাঁচ মাস ধরে ওই রোগী পেটের ভেতরের যন্ত্রণা নিয়ে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করেন। এরপর তার পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়।
ঘটনাটি ঘিরে গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে।
আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন এনাম ঘটনাটির জন্য ভুল স্বীকার করে বুধবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে বলেন,‘মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে আজ (বুধবার) সকাল থেকে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছি। এটা ভুল হয়েছে, এই জন্য আমরা অনুতপ্ত।’
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ‘বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই শুনেছি। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও যে হাসপাতালে এমন ভুলের ঘটনাটি ঘটেছে তা উল্লেখ করে স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে ঘটনার বিষয়ে ওই রোগীর বড় ভাই রুহুল আমিন বলেন, গত বছরের ৫ নভেম্বর দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার বোন শারমিন আক্তারকে ভর্তির পর হাসপাতালের খণ্ডকালীন চিকিৎসক এবং দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রোজিনা আক্তার রোগীকে দেখে জরুরি সিজার করতে পরামর্শ দেন। ডাক্তারের কথা শুনে আমরা সিজারে রাজি হলে ওই দিনই ডা. রোজিনা আক্তার ও তার সহযোগী ডা. শামীমা আক্তার লিন্টাসহ অন্যান্য নার্স এবং ওটি বয় মিলে আমার বোনের সিজার করেন। জন্ম হয় ছেলে সন্তান। ৯ নভেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিজারের দুদিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যথা হতে থাকে, হাসপাতাল থেকে এ সময় কিছু ওষুধ দেয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর অস্ত্রোপচারের ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে ব্যথা আরও বেড়ে গেলে তাকে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রচুর ওষুধ খেতে দেন। এক পর্যায়ে তার জীবন সঙ্কাটাপন্ন দেখে জেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম