কুমিল্লার প্রথিতযশা অভিনেতা শাহজাহান চৌধুরী।যার অস্থিমজ্জায় শিল্প-সংস্কৃতি তথা নাটক ও ফটোগ্রাফী নিবিড়ভাবে লেগে আছে।বিশেষ করে তিনি নাট্যচর্চাকে তার জীবনের একটি অংশ বলে মনে করেন।২০১৯ সালের ১৯ জুন কুমিল্লা নাট্যজোটের কর্মীরা শাহজাহান চৌধুরীকে নাট্যগুরু উপাধি দেয়। ওইদিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে শাহজাহান চৌধুরীর হাতে নাট্যগুরু উপাধির সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন।
শাহজাহান চৌধুরী তার ব্যক্তিগত অর্থে একটি ফান্ড গঠন করে ওই বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে ‘নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী প্রণোদনা পুরস্কার’ প্রচলন করে সংলাপ- কুমিল্লা।ওইদিন কুমিল্লা টাউনহলে প্রতিবিম্ব থিয়েটারের উম্মে হাবিবা নিহা ও চৌকষ নাট্য সম্প্রদায়ের আবদুল্লাহ আল মামুনকে ‘নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী প্রণোদনা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়।
দেশে করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টির পর থেকেও তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নাট্যচর্চা, নাটক মঞ্চায়ন করে আসছেন।কুমিল্লার বাইরেও তার টিম নিয়ে নাটক প্রদর্শন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এবারও মনে রেখেছেন নাট্যগুরু প্রণোদনা পুরস্কার প্রদানের বিষয়টি।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সংলাপ-কুমিল্লার দুইটি আয়োজন ছিল মুগ্ধতায় ভরা। একটি ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে চাঁদপুর ড্রামা’র পরিবেশনায় নাটক বৌমা মঞ্চায়ন এবং আরেকটি আয়োজন ছিল ‘নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী প্রণোদনা পুরস্কার’।এবছর নাট্যগুরু প্রণোদনা পুরস্কার দেয়া হয় ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের নাট্যকর্মী মৌসুমি সরকারকে।
সংলাপ কুমিল্লার উপদেষ্টা ও নজরুল গবেষক প্রফেসর ড. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, কুমিল্লায় নাট্যচর্চা এগিয়ে নিতে এবং নাটক মঞ্চায়নের বিষয়টি এগিয়ে নিতে সহসা কুমিল্লা শিল্পকলায় ও শচীন দেব বর্মনের বাড়ীতে মোট দুটি মুক্তমঞ্চ তৈরি করে দেয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, সংলাপ-কুমিল্লা কেবল নাটকই নয়, এ সংগঠন নানা সৃজনশীল কাজের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে। নাট্যগুরু প্রণোদনা পুরস্কার প্রদান একটি সৃজনশীল উদ্যোগ। এবারে যিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন তার সামনে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে শক্তি সাহস যুগাবে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সংলাপের পরিচালক নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ এবং সম্মিলিত নাট্যজোট কুমিল্লার সভাপতি মাফুজুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী প্রণোদনা পুরস্কার’ দেয়া হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের নাট্যকর্মী মৌসুমি সরকারকে। প্রণোদনা পুরস্কার হিসেবে মৌসুমি সরকারকে দেয়া হয় নগদ ৫ হাজার টাকা ও একটি সম্মাননা ক্রেষ্ট।প্রণোদনা পুরস্কার প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় মৌসুমি সরকার তার সংগঠন ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার পরিবার, নাট্যগুরু শাহজাহান চৌধুরী ও সম্মিলিত নাট্যজোটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই সম্মান আমার চলার পথে প্রেরণা হয়ে থাকবে।
এ প্রসঙ্গে সংলাপ কুমিল্লার পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী বলেন,‘এবার একজন নারী নাট্যকর্মী হিসেবে দেশ ও দেশের বাহিরে মোট ২০টি নাটকে অনবদ্য ভূমিকার রাখার জন্য মৌসুমি সরকারকে এই পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার ছাড়াও প্রতিবিম্ব থিয়েটারের সাথেও মৌসুমি নাটকে অভিনয় করে দর্শক নন্দিত হয়েছেন। আমি তার সাফল্য কামনা করি। প্রতিবছর যেনো নাট্যগুরু প্রণোদনা পুরস্কার চালু রাখতে পারি, এজন্য সকলের দোয়া, ভালোবাসা প্রত্যাশা করছি।’
নাটচ্যগুরু প্রণোদনা পুরস্কার পর্ব শেষে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চাঁদপুরের নাট্য দল চাঁদপুর ড্রামা’র পরিবেশনায় নাটক বৌমা মঞ্চাস্থ হয়। মিলনায়তন ভর্তি দর্শক নাটকটি দারুণভাবে উপভোগ করেন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম