# কলেজ গেইটের সামনে খুব সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকে সবজির ট্রাক।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মোকাম ইউনিয়ন ও নিমসার ঘিরে ঐতিহ্যবাহী জুনাব আলী কলেজ গেইটের সামনে সড়ক ও জনপথের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রায় অর্ধশত সবজির আড়ত ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর বোলডুজারে গুঁড়িয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন।হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহযোগিতায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আনসার ব্যাটেলিয়ন ওই উচ্ছেদ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিল।
কিন্তু সেখানে গত ৫/৬ মাস ধরে ধীরে ধীরে আবারো গড়ে উঠছে সবজির অবৈধ আড়ত।করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে একটি মহল কলেজের সামনে সড়ক ও জনপথের জায়গায় সবজি আড়ত দিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে।কলেজের সামনে অবৈধভাবে বসানো এসব সবজির আড়ত ঘিরে প্রতিদিনের বিক্রির কমিশনের কয়েক লাখ টাকা ঢুকছে নিয়ন্ত্রণকারিদের পকেটে।
অথচ মহাসড়কের দক্ষিণপাশে নিমসার সবজি বাজারের জন্য নির্র্ধারিত দোকানকোঠার বেশির ভাগই খালি পড়ে থাকে। কলেজের সামনে মহাসড়কের পাশে বসানো অবৈধ সবজি আড়তগুলোর কারণে যানজট সৃষ্টিসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট জুনাব আলী কলেজ গেইটের সামনের ও আশপাশের অংশ দখল করে অবৈধভাবে সবজির আড়ত বসাচ্ছে।
#গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরের উচ্ছেদাভিযান। ফাইলফটো।
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ওই কলেজের শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল আলম অবৈধ স্থাপনার আড়তসমেত বাজার অপসারণের জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং-১২৭৩৮/২০১৯ দায়ের করে। সেই আলোকে গত বছরের ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট কলেজের সামনে থেকে বিধিসম্মতভাবে অবৈধ বাজার উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুড়িচং কুমিল্লাকে নির্দেশ প্রদান করেন। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনার আলোকে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর বুড়িচং উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী অফিসার মো. ইমরুল হাসান সাতদিনের মধ্যে অবৈধ সব স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ দেন। কিন্তু ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তা সরিয়ে না নেয়ায় পরদিন ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তৎকালীন নির্বাহী অফিসার মো. ইমরুল হাসানের নেতৃত্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহযোগিতায় মহাসড়কের কুমিল্লার মোকাম ও নিমসার অংশে গড়ে ওঠা অবৈধ প্রায় ৫০টি স্থাপনা বোলডুজারে গুঁড়িয়ে দিয়ে জায়গাটি উদ্ধার করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি রোপন করেন।
কলেজ খোলা অবস্থায় সিন্ডিকেটধারিরা উচ্ছেদ হওয়া জায়গায় ফের বাজার বসানোর চেষ্টা করেনি।কিন্তু করোনার শুরুতে লকডাউনের কারণে কলেজের সামনের অংশ ফাঁকাই ছিল।জুলাইয়ের দিকে জীবনযাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলে সিন্ডিকেটধারিরা ধীরে ধীরে কলেজের সামনে এবং সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে ফের সবজির আড়ত বসানো শুরু করে।
# রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে কলেজ গেইটের সামনে সবজিভর্তি পরিবহন।
রবিবার (১৩ডিসেম্বর) খুব সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজের প্রবেশ মুখে সারি সারি সবজির ছোট বড় ট্রাক দাঁড়ানো। এসব পরিবহন থেকে সবজি নামানো হচ্ছে। আবার ট্রাকে জমা কাঁচা সবজির আর্বজনাগুলো হেলপার ও চালকরা কলেজের সামনে রাস্তার ওপর জমা করছে।ধীরে ধীরে জমতে থাকে বেচাকেনা।সিন্ডিকেটের লোকজনও আসতে শুরু করেছে।তারা সবজি বিক্রির ওপর নজরদারি করছেন। কেননা, বেচা-বিক্রির ওপর কমিশনের টাকা নির্ভর করছে।সবমিলে খালি জায়গাটি এখন আগের মতো সবজি আড়তে ভরে গেছে।এসব আড়ত ঘিরে প্রতিদিন চলছে কয়েক লাখ টাকা কমিশন আদায়ের খেলা।
নিমসার জুনাব আলী কলেজের অধ্যক্ষ মো. মামুন মিয়া মজুমদার জানান,‘আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও একটি শ্রেনী এমন বেআইনি কাজটি করছে। যা শিক্ষার পরিবেশের প্রতিকূলতা তৈরী করবে। এখন কলেজ বন্ধ আছে। আর এই সুযোগে একটি মহল জায়গাটি আবারো দখল করে বাজার গড়ে তুলছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।’
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর জানান, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানায়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে আমরা এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।’
বুড়িচং উপজেলার নতুন নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ‘এই বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে জেনে ব্যবস্থা নিবো।’
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম