ছবি: কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন #
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন কুমিল্লার বাজারে পেঁয়াজের যৌক্তিক দাম রাখার আহবান জানিয়ে ব্যবসায়িদের উদ্দেশ্যে বলেছেন- ‘কুমিল্লার বাজার স্থিতিশীল থাকতে হবে, রাখতে হবে। এটা ব্যবসায়িদের কাছে সমিতির পক্ষ থেকে আমার অনুরোধ। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারসাজি কোন ব্যবসায়ি করবেন না। কুমিল্লার সুনাম রক্ষা করুন। পেঁয়াজের টাকায় রাতারাতি বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করবেন না। এভাবে পেঁয়াজ বিক্রিতে অযৌক্তিক দাম নিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করা যাবে না। সৎ ও যৌক্তিকভাবে আয় করুন। মানুষকে ঠকিয়ে, কস্ট দিয়ে অর্জিত টাকায় বড়লোক হওয়া যায় না। ’
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুরে তার কার্যালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘প্রতিসময়’ এর কাছে দেয়া সাক্ষাতকারে কুমিল্লার বাজারে পেঁয়াজের দরদাম এবং এ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির অবস্থান তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি।
কুমিল্লার ব্যবসায়ি নেতা আতিক উল্লাহ খোকন আরও বলেন, ব্যবসায়িদের আমরা বলেছি, আপনারা অবশ্যই লাভ করবেন। তবে এটা গ্রাহকের বা ভোক্তার জন্য গলার কাঁটা হতে পারবে না। লাভ যৌক্তিক হতে হবে। গ্রাহকদের ব্যাপকভাবে ঠকানোর চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালাবে। এক্ষেত্রে কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতি সবধরণের সহযোগিতা দিবে।
ব্যবসায়ি নেতা খোকন আরও বলেন, আমরা কুমিল্লার ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সাথে পেঁয়াজের বাজার দর নিয়ে আলোচনায় বসেছি। পেঁয়াজের দাম বাজারে স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে দোকান মালিক সমিতি কুমিল্লা জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে এবং এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। যেকোন দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি ঘিরে গুটি কতেক ব্যবসায়ির কারণে মানুষ সকল ব্যবসায়িকে সিন্ডিকেটধারিসহ নানান ভাষায় গালমন্দ করে থাকে। এটা অন্তত কুমিল্লায় আর হতে দেয়া যাবে না। আমরা দোকান মালিক সমিতি জেলা প্রশাসককে বলেছি, কুমিল্লার সকল বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার।
আতিক উল্লাহ খোকন পেঁয়াজ ব্যবসায়িদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যারা পেঁয়াজ মজুদের ব্যবসা করেন, তারা করেন, সমিতির কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের ক্রাইসেস (সংকট) সৃষ্টি করা যাবে না। পেঁয়াজ মজুদ করে অতিরিক্ত দামে বা অযৌক্তিক দামে বাজারের খুচরা দোকানদারদের কাছ থেকে বিক্রি করবেন এটা হবে না। বাজারের পাইকারি আড়তদার ও খুচরা দোকানদার কেউ যদি পেঁয়াজ ক্রয়ের সামগ্রিক খরচের হিসেবের দিক থেকে কোন গ্রাহক বা ভোক্তার কাছে অযৌক্তিক দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে, আর এর প্রমাণ মিললে দোকান মালিক সমিতি ও স্থানীয় বাজারের সমিতি থেকেও ওই ব্যবসায়ির সদস্যপদ বাতিল করার ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আড়তদার ও খুচরা দোকানদার যেখান থেকেই পেঁয়াজ ক্রয় করুন, এটার প্রকৃত রশিদ থাকতে হবে। প্রশাসন, সমিতি এমনকি সাধারণ গ্রাহকও যদি দামের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টির কারণে রশিদ দেখতে চায়, তাহলে দোকানদার সেই রশিদ দেখাতে বাধ্য থাকবেন।
ক্রয়মূল্যের বাইরে পরিবহন খরচ (দূরত্বভেদে) এবং আনুসঙ্গিক খরচ যুক্ত করে সর্বসাকুল্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজে যে ক্রয় খরচ আসবে তা থেকে ৫ টাকা বা সর্বোচ্চ ৭ টাকা লাভে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন আড়তদাররা।
আর খুচরা দোকানদাররা আড়ত থেকে যে দরে পেঁয়াজ কিনবেন তা থেকে পরিবহন দূরত্বের খরচ যুক্ত করে গ্রোহক বা ভোক্তা থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজে ৬ থেকে ৭ টাকা লাভ করবেন।
ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ি নেতা আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, যখনই কোন পণ্যসামগ্রীর দাম একটু বাড়লো, তখনই ভোক্তারা বস্তা ভরে কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম একটু বাড়তেই একেক পরিবার ১০/২০ কেজি কিনে নিচ্ছেন। এতে করে বাজারে ওই পণ্যটি চাহিদা মতো অন্যরা পাচ্ছেনা। আড়তদার ও বিক্রেতারা তখন একটা সুযোগ পায়। আর এ সুযোগটা ভোক্তারাই সৃষ্টি করে দিচ্ছে। তাই প্রয়োজনের বেশি কিনে ওই পণ্যের চাহিদা বাড়াবেন না। কোন পণ্যের দাম বাড়ার সময়ে বেশি বেশি কিনে ঘরে মজুদ করার কালচার থেকে ভোক্তা বা গ্রাহকের বেরিয়ে আসা উচিত।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম