কুমিল্লার মুরাদনগরের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার ৩ নম্বর এজহারনামীয় আসামি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বার বাচ্চু মিয়াহত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েও আড়াই ঘন্টা পর জানালেন 'না'।
আজ সোমবার সকালে কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান জানান, গতকাল রোববার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার আলোচিত হত্যা মামলার ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আর মামলার ৩ নম্বর আসামি বাচ্চু মিয়া স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে আগ্রহ বা মত প্রকাশ করায় তাকে আদালতে রাখা হয়। কিন্তু প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি মত পাল্টিয়ে জানান স্বীকারোক্তি দিবেন না। ফলে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি না হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর পাঠানো হয়। এ নিয়ে এই মামলায় মোট আটজন কারাগারে রয়েছেন।
গতকাল রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে মুরাদনগরের চাঞ্চল্যকর তিন খুনের ঘটনায় ঢাকায় র্যাবের হাতে আটক ৬ আসামিকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। এসময় মামলার এজহারনামীয় ৩ নাম্বার আসামি বাচ্চু মিয়া মেম্বার আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিতে রাজি হলে তার বক্তব্য রেকর্ডের প্রক্রিয়া নেওয়া হলে তিনি দেব, দিচ্ছি এসব বলে সময়ক্ষেপন করে প্রায় আড়াই ঘন্টা পর জানান জবানবন্দি দিতে রাজি নন। তখন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, এর আগে বাচ্চু মেম্বারের সঙ্গে আদালতে আনা বাকি পাঁচ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৫ নং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্র্যাট আদালতের বিচারক সিদ্দিক আজাদ।
এদিকে বাচ্চু মেম্বার গ্রেফতার হলেও অপর দুই হোতা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শিমুল বিল্লাহ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী বাছির মিয়া এখনো অধরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাছিরের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের আগেরদিন বুধবার রাতে বৈঠক হয় এবং হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। আর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কড়ইবাড়ি গ্রামে রোকসানা আক্তার রুবির বাড়ির সামনে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টায় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ ও ইউপি মেম্বার বাচ্চু মিয়া একত্রিত হয়ে শলা-পরামর্শ করেন। এর ৩০ মিনিট পরই খলিলুর রহমান জুয়েলের বাড়িতে হামলা শুরু করে এলাকার লোকজন। এ সময়ে উত্তেজিত জনতা পিটিয়ে ও কুপিয়ে ওই বাড়ির খলিলুর রহমান জুয়েলের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকিকে (২৯) ঘটনাস্থলে হত্যা করে। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয় রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)। সে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম