কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর মেয়াদকালে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে অস্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ৭৭৭ কর্মীর বেতন স্থগিত করা হয়েছে এবং এতো সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এতে করে এসব কর্মীদের মাঝে ছাঁটাই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সাক্কু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি অস্থায়ী লোকবল নিয়োগ দিয়েছেন- এমন অভিযোগ করে মেয়র আরফানুল হক রিফাত বলেন, সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর চেয়ে নয় গুণের বেশি দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মী। এটা মেনে নেওয়া যায় না। অন্য কোথাও এমন পরিস্থিতি নেই। অস্থায়ী কর্মীদের বেশির ভাগেরই কাজ নেই। এতে সিটি করপোরেশনের বিপুল অঙ্কের টাকা বেতন দিতে হচ্ছে। তাই এসব কর্মীর জুলাই মাসের বেতন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
মেয়র রিফাত আরও বলেন, “আমরা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করছি। তালিকা করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোক রাখব। প্রয়োজনীয়তা না থাকলে অন্যরা বাদ যাবেন।
অস্থায়ী কর্মীদের সাধারণত মাসের প্রথম দিকে কয়েকটি ধাপে বেতন দেওয়া হতো। তবে রোববার বিকেল পর্যন্ত ওই ৭৭৭ কর্মচারীর কেউই জুলাই মাসের বেতন পাননি। তবে চলতি সপ্তাহে তাদের বেতন পরিশোধ করে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে,বর্তমানে স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ৮৩ জন। তাদের প্রতি মাসে ৪৪ লাখ ২৭ হাজার ৫৫ টাকা বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে।অস্থায়ী ৭৭৭জন কর্মী আগে ৩০০ টাকা করে দৈনিক বেতন পেতেন। চলতি বছরের মে মাসে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে মনিরুল হক সাক্কু তাদের হাজিরা ৩৫০ টাকা করেন। তাদের পেছনে সিটি করপোরেশনের খরচ প্রতি মাসে ৭২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯০ টাকা। কুমিল্লা সিটির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, ৫৯০টি পদ সৃজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৯ জনকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হলে লোকবল সংকট দূর হয়ে স্থায়ী জনবল বাড়বে এবং দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মীর সংখ্যা কমবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট কাউন্সিলর আছেন ৩৬ জন। তাদের প্রত্যেকের ওয়ার্ডে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক পাঁচজন করে কাজ করছেন। ৩৬ জনের আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ড পরিচ্ছন্নতার কাজে ২০ জন করে রয়েছেন।করপোরেশনের ময়লা ফেলার ট্রাক আছে ২০টি। প্রতিটিতে কাজ করে পাঁচজন করে। এ ছাড়া পার্ক, বাজার, মার্কেট, সিটি করপোরেশনের প্রধান ও দক্ষিণের কার্যালয়ে লোকবলের সঙ্কট থাকায় দৈনিক হাজিরাভিত্তিক এসব কর্মচারীরা বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করছেন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম