বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে কুমিল্লা নগরীর তিনটি স্থানে পৃথক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মোশারাত জাহান মুনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে রবিবার নগরীর ছাতিপট্টি, আদালত প্রাঙ্গণ ও কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে তিনটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (২ মে) সকাল ১১টায় ছাতিপট্টি এলাকায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কুমিল্লা জেলা শাখার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে প্রথম মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড়শত মুক্তিযুদ্ধা এবং শতাধিক সন্তান এ মানব বন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহজাহান সাজু, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান।এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক শাহরিয়ার হুদা রিপনসহ অন্যান্যরা।
এদিকে বেলা ১২ টায় কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গনে মহানগর আইনজীবী কল্যান পরিষদের উদ্যেগে আরেকটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী আইনজীবীরা বলেন, মুনিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বসুন্ধরার এমডি আনভীর এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত।
কুমিল্লা জেলা বারের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন, অ্যাডভোকেট শহীদুল হক স্বপন, নারীনেত্রী অ্যাডভোকেট ফাহমিদা জেবিন, অ্যাডভোকেট আল রেজা খান রাজু, অ্যাডভোকেট মেহজাবিন খান নিশু, অ্যাডভোকেট গাজিউল হাসান সোহাগ, অ্যাডভোকেট নেয়ামত উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।মানববন্ধনে আইনজীবীরা মুনিয়ার পরিবারকে এ মামলা বিনাখরচে পরিচালনা ও আইনি হায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন।
একইদিন বিকেল ৪ টায় কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষুদ্ধ কুমিল্লাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বোন হত্যার বিচার চাইলেন নিহত মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। মানববন্ধনকারীরা তাদের বক্তব্য বলেন, যদি আনভীররা এখন বেঁচে যায় তাহলে এমন আরো বহু ঘটনা বাড়বে। যারা মুনিয়ার হত্যার সাথে জড়িত তাদেরকে আটক ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা এড আনিসুর রহমান মিঠু, নিহত মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান, বাসদ নেতা নাসিরুল ইসলাম মজুমদার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের কুমিল্লার সংগঠক ফারজানা আক্তারসহ অন্যান্যরা।
কুমিল্লার কোতয়ালী থানায় নুসরাতের জিডি:
এদিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরী ( জিডি) করেছেন গুলশান ফ্ল্যাটে উদ্ধার হওয়া নিহত মোশারাত জাহান মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। শনিবার (১মে) বেলা ২ টায় তিনি কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় সাধারন ডায়রী ( জিডি) করেন।নুসরাত জাহান জানান, মুনিয়া হত্যাকান্ডের দু দিন পর থেকে বেনামে বিভিন্ন নম্বর থেকে প্রতিদিন ফোন কল আসে।ফোন রিসিভ করলেই ওপাশ থেকে বলতে থাকে আপনি কার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জানেন? তার বিরুদ্ধে মামলা করে কিছুই হবে না। আপনারা কিছুই করতে পারবেন না। ভালো হয় মামলা তুলে নেন। না হয় ভবিষ্যতে খারাপ হবে।
নুসরাত জাহান আরো বলেন, এসব হুমকি ধমকির কারনে আমি ভীত সন্ত্রস্ত আছি। তাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় জিডি করেছি।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আনোয়ারুল হক জানান, শনিবার বেলা ২ টায় আমরা সাধারণ ডায়েরীটি গ্রহণ করি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
উল্লেখ্য, রাজধানীর গুলশানের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে গত সোমবার ওই তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মেয়েটির বড় বোন আত্মহত্যায় প্ররোচনার একটি মামলা করেন। মামলার পর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি ধমকি আসতে থাকে।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম