ছাত্রদলের কমিটিতে পদ না পাওয়ার ক্ষোভে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অবশেষে সোমবার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন, কুমিল্লা নগরীর পশ্চিম ধর্মসাগর পাড় এলাকার রশিদ মিয়ার ছেলে মো. মহসিন (৩২), সদর দক্ষিণের আশ্রাফপুর ইয়াসিন মার্কেট এলাকার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ছেলে সালাহ উদ্দিন ওরফে রকি (৩০), শাসনগাছা দফাদার বাড়ি এলাকার অজ্ঞাত পিতার ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (৩০), কালিয়াজুড়ি এলাকার সাইফুল ইসলাম (২৫), এবং পাঁচথুবী ইউনিয়নের শ্রীপুর এলাকার মারুফ আহমেদ (২৪) সহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু সোমবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কুমিল্লা মহানগর ও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছাত্রদলের পদবঞ্চিত দাবি করা কিছু সন্ত্রাসী এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে, যারা বিএনপির গায়ে দাগ লাগাতে চায়। দলীয় অফিসে যারা অগ্নিসংযোগ করেছে তারা শহিদ জিয়ার সৈনিক হতে পারে না। তারা ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের দোসর। অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি পেতে হবে। দলীয় কার্যালয়ে এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং দলের অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি তৈরির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
মামলার বাদী ইউসুফ মোল্লা টিপু আরো জানান, ঘটনার পরপরই তিনি কার্যালয়ে ছুটে যান এবং উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশের দোকানগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করেন। এরপর দলীয় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের পরামর্শে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানার মাধ্যমে থানায় জমা দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায় , গত ১৫ মে কুমিল্লা মহানগর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এই কমিটি বাতিলের দাবিতে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। অভিযুক্তরা নিজেদের পুরোনো ত্যাগী ও পদবঞ্চিত কর্মী দাবি করে শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। ১৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ রোডে অবস্থিত বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলবদ্ধভাবে হামলা চালায় অভিযুক্তরা। তারা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, লোহার রড, লাঠি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ের সামনে এসে উত্তেজনাকর ও উসকানিমূলক স্লোগান দেয়। এরপর একপর্যায়ে তারা দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায়।
হামলাকারীরা দলীয় অফিসের দেয়ালে ঝুলানো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি নামিয়ে এনে মাটিতে ফেলে দেয়। তারা অফিসের চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা ভেঙে ফেলে এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে। তারা কার্যালয়ের আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
Last Updated on May 20, 2025 6:30 pm by প্রতি সময়