পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতাকারী কুমিল্লা মডার্ণ হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম আকতার হোসেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক রাসেল উদ্দিন মজুমদার, আবুল কাসেমসহ তিন শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে তাদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা স্কুলের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়নি। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে তাদের কর্মসূচি পালন করে। এতে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিযোগে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপির অনুসারী এ কে এম আকতার হোসেন ২০১৯ সালে স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীতে ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা) রাসেল উদ্দিন মজুমদার ও সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রভাতী) আবুল কাসেমকে সাথে নিয়ে নানান অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হয়রানী করে আসছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, এ সময়ে তারা ভর্তি, কোচিং, ক্লাসপার্টি, প্রশসংসাপত্র, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, বাণিজ্য, নন-এমপিও শিক্ষকদের কাগজপত্র সরিয়ে অবৈধ সুবিধা লাভ, শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য, সিলেবাস, ডায়েরি, ছাত্রব্যাচ বাবদ টাকা উত্তোলন, আনন্দ ভ্রমণ, স্কুলের অর্ধবার্ষিক, প্রাক্নির্বাচনি, নির্বাচনি, মডেল টেস্ট ও বার্ষিকসহ বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তোলনকৃত টাকা শিক্ষকদের মাঝে নামমাত্র বিতরণ করে আত্মসাৎ বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের নামে ভুয়া-বিল ভাউচারে অর্থ আত্মসাৎ এবং স্কুলের পারফরমেন্স বেজডগ্রান্ডস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশন্সের (পিবিজিএসআই) টাকাসহ স্কুল তহবিলের মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন।
এরই মধ্যে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ওই তিন শিক্ষক গতকাল রোববার পর্যন্ত স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত দাবি করে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের নিকট গত ১২ সেপ্টেম্বর ১৬ দফা অভিযোগ দাখিল করে। এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় রোববার তারা স্কুলটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে ক্লাস বর্জন করে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, এসব বিষয়ে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি ওই কমিটিকে ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতার আহবান জানিয়ে বলেন, কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই পর্যন্ত ক্লাস বর্জন না করে ছাত্র-শিক্ষকদের ধৈর্য ধারনের আহবান জানান।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম