ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক চৌদ্দগ্রাম-লাকসাম সড়ক। এমনিতে এ সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য পণ্যবাহী ও যাত্রিবাহী পরিবহণ চলাচল করে। আর ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে যানজট থাকলে বিকল্প সড়ক হিসেবে গুরুত্ব পায় এ সড়কটি। কেননা এ সড়কে লাকসাম বাইপাস হয়ে চাঁদপুর কিংবা কুমিল্লা বিশ্বরোড পৌঁছানো যায় অনেকটা নিরাপদেই। বর্তমানে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের ফোর লেনের কাজ চলমান থাকায় এ সড়কটির ব্যবহার বেড়ে গেছে।
ব্যস্ততম এ সড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো চৌদ্দগ্রাম বাজার সংলগ্ন অংশ থেকে থেকে বাঙ্গড্ডা বাজার পর্যন্ত। এই অংশের বিভিন্ন স্থানে খাদ-খন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাতের ফলে এসব খাদ-খন্দ ও গর্ত ভয়ানক আকার ধারন করেছে। বিভিন্ন লরি ও ট্রাকসহ ভারী যানবাহন নিয়মিত চলাচল করায় এসব গর্তগুলো ছোট থেকে আরও বড় হচ্ছে। গত কয়েকদিনে এসব গর্তে বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকে পড়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে।
আজ (২০ আগষ্ট) বৃহস্পতিবার ভোররাতে সড়কের ফেলনা ষ্টীল ব্রীজ অংশে একটি ভারী ট্রাই গর্তে আটকে যায়। এর ফলে রাত থেকেই এখন পর্যন্ত বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও সড়কের পূর্ব চাঁন্দিশকরা মন্দির সংলগ্ন অংশে আরেকটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তের ভয়াবহতায় স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট অংশের মাঝখানে লাল ফিতা স্থাপন করেছে। যাতে করে বিপজ্জনক অংশ এড়িয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারে। প্রায় প্রতিদিনই এসব গর্তে পড়ে বিভিন্ন যানবাহন আটকে পড়াসহ নিয়মিত ছোট-বড় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি পানির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে সিএনজি চালিত অটো রিক্সা, ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক, রিক্সাসহ ছোট গাড়িগুলো রাস্তার মধ্যেই বিকল হয়ে পড়ছে অনেক সময়। মাঝ পথে এসব পরিবহণগুলো থমকে যাওয়ার ফলে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রতিনিয়ত।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ফেলনা-চান্দিশকরা সংলগ্ন ষ্টীল ব্রীজটি অত্যন্ত পুরাতন। যা ৯০’র দশকে নির্মাণ করা হয়। ব্রীজটির বিভিন্ন অংশের রেলিং ভেঙ্গে পড়েছে। বেশ কয়েকটি পাটাতন পূর্ব থেকেই জোড়াতালি দেয়া। ব্রীজের অন্তত ৪-৫টি পাটাতন আশংকাজনকভাবে হেলে কিংবা ফেটে গেছে। ব্রীজের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলার সময় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্রীজটি কেঁপে উঠে। দ্রুত ব্রীজটি পূণ:নির্মাণ না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ সড়কটি মেরামত কাজ হলেও কাজের মান খুবই দুর্বল। যার কারণে বর্ষা মৌসুম আসলেই সড়কের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যে সড়ক মেরামতের নামে কিছু ইট ভাঙ্গা রাস্তায় ফেললেও তা পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া অনেক সময় সড়কে নিয়মিত চলাচল করা সিএনজি ড্রাইভাররা নিজ খরচেই এসব খাদ-খন্দে ইট-কংক্রিট ফেলে। সড়কের অনেক স্থানে স্থানীয়রাও উদ্যোগ নিয়ে ইট-কংক্রিট ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এসব ইট-কংক্রিত ২-১দিন পরই বৃষ্টির পানিতে মিশে সড়ক কাদাযুক্ত ও পিচ্ছিল হয়ে ভয়ংকর আকার ধারন করে। জরুরী ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির ভাঙ্গা অংশগুলোর সংস্কার কাজ না করলে জন-ভোগান্তি আরো চরমে পৌঁছবে।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রাব্বি জানান, লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কটির নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কের ষ্টীল ব্রীজসহ কুমিল্লা জেলার সর্বমোট ৩৪টি ব্রীজের নির্মাণে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি পাশ হলে আশাকরি দ্রুত ব্রীজটি নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম