শিক্ষা,শিল্প,সাহিত্য মানুষকে চিন্তাশীলতার ভেতর দিয়ে নতুন চেতনার পথ দেখায়। অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘প্রতিসময়’ এর শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য বিভাগের আয়োজনে আপনিও যুক্ত হতে পারেন সৃজনশীল লেখা নিয়ে। আজকে এ বিভাগে প্রকাশ করা হল একসময়কার সুন্দর ছিমছাম শহর কুমিল্লাকে নিয়ে লেখা ডা. মল্লিকা বিশ্বাসের কবিতা ‘শহর কমলাঙ্ক’।
চিকিৎসক পরিচিতির বাইরেও ডা. মল্লিকা বিশ্বাস একজন কবি ও লেখক। তার বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থও প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবছর একুশে বইমেলায় স্থান পেয়ে থাকে মল্লিকা বিশ্বাসের লেখা বই। পেশাগত ব্যস্ততা আবার লেখালেখির মাঝেও তিনি একজন সমাজকর্মী, সৃজনশীল সংগঠক। জাতীয় রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ-কুমিল্লা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ইনার হুইল নেত্রী মল্লিকা বিশ্বাসের অবসর কাটে কখনো কখনো গান গেয়ে, কখনো গাছ-গাছালির পরিচর্যা, কখনোবা ভিন্ন স্বাদের রেসিপি তৈরিতে।
-ডা. মল্লিকা বিশ্বাস-
তিন দশকের বেশী সময় আগে এসেছি এই শহরে,
এ শহরকে একসময় বলা হতো ব্যাঙ্ক ও ট্যাঙ্ক এর শহর
রোম্যান্টিক এই শহরে মোহনীয় লাল শাপলা ফোঁটা পুকুর ছিলো।
তালপুকুর পাড় দিয়ে হেঁটে গেলে
কাঠবিড়ালীর সাথে খুকীর কথোপকথন শোনা যেতো,
রবী ঠাকুরের পায়ের চিহ্ন পড়েছিলো এ শহরের পথে
প্রাতঃভ্রমনে বের হলে ধর্মসাগর পাড়ের রাস্তায়
ব্যাঙ সাগরের স্নিগ্ধ রূপটি চোখে মায়ার কাজল পড়িয়ে দিতো।
প্রাচীন বিদ্যাপীঠ, পাঠাগার, বাংলাভাষাও
সঙ্গীত সংস্কৃতির লালনভূমি এই সমৃদ্ধ জনপদ।
ভেবে অবাক হই কীভাবে চোখের সামনে বদলে গেলো
এই শহরের স্কাইলাইন!
অপরিকল্পিত নগরায়নের হিংস্র থাবায়
কাব্যিক এই শহরটি পরিণত হলো
ইট, কাঠ, লোহা, লক্করের স্তুপীকৃত জঞ্জালে।
আজ এ শহর শহরভর্তি হাসপাতালের বিছানায়
শুয়ে এপাশ ওপাশ করে।
ফুটপাত হকারের দখলে থাকে
ড্রেনের নোংড়া জল উঠে আসে রাস্তায়
পথচারীর হাঁটা দায়৷
তবুও শপিংমলে বিছিয়ে থাকে
মূল্যছাড়ে ব্যবসার ফাঁদ।
এ শহর প্রায়শই প্রলাপ বকে,
কখনো সুরেলা বা কখনো গলা ছেড়ে বেসুরো গান গায়।
রংবেরং এর পোস্টারের উল্কিতে
এ শহরের দিগন্ত ঢেকে যায়,
এ শহরে আজ সূর্যোদয় বা রংধনুর দেখা মেলা ভার৷
আমি তুমি সে আপনি সবার মতোই
এ শহরও আজকাল প্রতিদিনই লড়াই করে
বহুরূপী নেকড়ে ও শেয়ালের সাথে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম