কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা না হলেও গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন অধিকাংশ বাড়ি ঘরের পুরুষরা।
মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান শুক্রবার বিকেলের দিকে বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তাঁরা কুমিল্লা থেকে এজাহার লিখে এনে জমা দেবেন। এছাড়া নিহতের এক মেয়ে ওই ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন। তার বাবা খলিলুর রহমান জুয়েল ঢাকা থেকে রওনা হয়েছেন বলে শুনেছি। ঘটনার পর এলাকা পুরুষশূন্য। সবাই পলাতক। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের যৌথ বাহিনী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে। জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
ওসি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও এখন সবাই জামিনে ছিলেন। বৃহস্পতিবার যাঁরাই নেতৃত্ব দিয়ে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনাস্থলে নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, এই এলাকার বারু মিয়ার ছেলে বাছির নেতৃত্ব দিয়ে পুরো হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে। বাছিরের পরিবারের অনেক লোকজন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল ভিল্লা ও বাচ্চু মেম্বারের ইন্ধনে বাছির নেতৃত্ব দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। চেয়ারম্যান ঘটনার আগের দিনও এসেছিলেন কড়ইবাড়ি। ঘটনার দিন সকালে তিনি এখানেই ছিলেন। চেয়ারম্যান ও মেম্বার পুরো ঘটনায় জড়িত। তাঁরাই যুক্তি করে আমার স্বামীর পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে। আমি তাঁদের বিচার চাই।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকার কড়ইবাড়ি গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইল চুরির একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দিন ধরে চলা উত্তেজনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে স্থানীয় বাসিন্দা বাছির উদ্দিন মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে ক্ষেপিয়ে তুলে তাঁর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালায়। এ সময়ে উত্তেজিত জনতা পিটিয়ে ও কুপিয়ে
ওই বাড়ির খলিলুর রহমান জুয়েলের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকিকে (২৯) ঘটনাস্থলে হত্যা করে। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয় রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)। বৃহস্পতিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
Last Updated on July 4, 2025 9:06 pm by প্রতি সময়