দেড় বছরের মাথায় ফের ছাত্রী যৌন হয়রানীর অভিযোগে আটক হলেন কুমিল্লার মুরাদনগ উপজেলা সদরের উম্মে হানী মহিলা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মোঃ হাসান। তিনি উপজেলার নিমাইকান্দি গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের পুত্র।
মাদরাসার আবাসিক ছাত্রীদেরকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে অভিভাবকদের লিখিত, মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক মাওলানা মোঃ হাসানকে মুাদনগর পুলিশ আটক করে। এসময় তার শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
মাদরাসার আবাসিক ছাত্রীরা গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানির বিষয়টি জানায়। ছাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি সামাধান করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন শিক্ষকরা। সেই প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত হওয়ার আগেই সকল শিক্ষার্থীদের ডেকে একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে গেলে তাদের উপরে অজ্ঞান করার স্প্রে ছুঁড়েন প্রধান শিক্ষক হাসান।
এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বাকিরা দৌড়ে মাদরাসার বাইরে চলে আসে। বিষয়টি অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানতে পেরে মাদরাসা অবরোধ করে রাখে। ঘটনাটি মুরাদনগর থানা পুলিশ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যৌন হয়রানীর অভিযোগহ পুরো বিষয়টি জানতে পরে প্রধান শিক্ষক মাওলানা হাসানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়
মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক হাসানের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির অভিযোগ করতো। যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর অনেককে কোন প্রকার কারণ ছাড়াই মাদরাসা থেকে বের করার অভিযোগও পেয়েছি বহুবার। এ ব্যাপারে সকল শিক্ষকরা তাকে চাপদিলে সে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করতেন। বিষয়টি নিয়ে শনিবার সকালে আমরা সকলে বসে প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগেই তিনি ঘটনাটি ধামা চাপা দিতে ছাত্রীদের পর অজ্ঞান করার স্প্রে ছুঁড়েন।
মুরাদনগর থানা অফিসার ইনচার্জ সাদেকুর রহমান জানান, যৌন হয়রানীর শিকার এক ছাত্রীর মা এ বিষয়ে থানায় মামলা করেছেন। মাওলানা হাসানের বিরুদ্ধে আগেও যৌন হয়রানীর একটি মামলা হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক হাসান তার ১ শত টাকা চুরি হয়েছে এই অভিযোগ এনে হিফজ বিভাগের দশ বছরের এক ছাত্রীকে তার অফিস রুমে ডেকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রধানশিক্ষক মাওলানা হাসানকে আটক করে। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই মামলায় জামিনে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন প্রধান শিক্ষক মাওলানা হাসান।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম