যানবাহনের বেপোরোয়া গতির কারণে দেশের ইকোনমিক লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ৯৭ কিলোমিটার অংশে এবং আঞ্চলিক সড়কেও বেড়েছে দুর্ঘটনা। এবছরের জুলাই মাসে কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন। আহত হয়েছে অর্ধশত। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া পরিবারের স্বপ্ন ভেঙ্গে যেমন চুরমার হয়ে গেছে। তেমনি আহতদের অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করে পার করছেন দুর্বিষহ জীবন। হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তাদের মতে চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালানোর কারণেই মূলত দুর্ঘটনা ঘটছে।
প্রতিদিন মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, ফেনি, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, রামগতি, বান্দারবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও ঢাকা থেকে মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ, লাকসাম এবং কুমিল্লা থেকে ঢাকা, ফেনি, বান্দারবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ৪০টির বেশি গন্তব্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে। মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে ফেনির মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কুটম্বপুর, হাসানপুর, শহীদনগর, গাজীপুর, রায়পুর, পুটিয়া, দৌলতকান্দি, বারপাড়া, জিংলাতলী, নাওতলা, আমিরাবাদ, রায়পুর। চান্দিনা উপজেলার হাড়িখোলা, নুরীতলা, ছয়ঘড়িয়া, দোতলা, কাঠেরপুল, গোবিন্দপুর, কোরেরপাড়, গোবিন্দপুর। বুড়িচং উপজেলার নিমসার, কাবিলা, কোরপাই, কালাকচুয়া, সদর উপজেলার কালাকচুয়া, জাগুরঝুলি। সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী, মাটিয়ারা, কমলাপুর, সোয়াগাজীর লালবাগ। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হাড়িসর্দার বাজার, আমজাদের বাজার, দত্তসার, আমানগন্ডা, নানকড়া ও মোহাম্মদ আলীর বাজার। এসব স্থানেই বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
কুমিল্লায় জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা ঘটনার মধ্যে ১ জুলাই ব্রাহ্মণপাড়ায় নিহত হয়েছেন ১ জন। ৬ জুলাই দাউদকান্দিতে মাইক্রোবাস চাপায় ২ পথচারী নিহত হন। ৮ জুলাই কুমিল্লা পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। ৯ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। ঈদের ছুটি শেষে ১৫ জুলাই জেলার দাউদকান্দি ও বুড়িচংয়ে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ২ জন। ১৮ জুলাই বরুড়ায় ১ জন, ১৯ জুলাই লাকসাম-বুড়িচংয়ে ২ জন এবং ২০ জুলাই বুড়িচংয়ে ১ জন মারা যান। অপরদিকে ২১ জুলাই দেবিদ্বারে ৩ জন এবং চান্দিনায় ১ জন মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দেবিদ্বার এলাকায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়।
হাইওয়ে পুলিশ ও সড়ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি এবং পথচারীদের অসচেতনতার কারণেই এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম