শিক্ষায় শতভাগ অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করতে হলে, করোনার সময়ে যারা শিক্ষার সাথে যুক্ত হতে পারেনি তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সহায়তা তহবিল ছাড়াও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য পৃথক ক্যাডার ঘোষণা করতে হবে। শিক্ষকদের কেবল বেতন বাড়ানোই নয় যোগ্যতা ও দক্ষতানুযায়ি প্রনোদনা দিতে হবে।
৩১ আগস্ট ( সোমবার) বেলা ১১টা থেকে প্রায় ১টা ৩০মিনিট পর্যন্ত এডুকেশন সেক্টর প্লান ও এসডিজি-৪’’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল পরামর্শ সভায় শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষ সরকারের কাছে এ আহ্বান জানান।
জাতীয় শিক্ষানীতি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা , ভিশন ২০২১ ও এসডিজি-৪ এর অভীষ্ট ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে একটি সমন্বিত শিক্ষাপরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ঢাকাস্থ ইউনেস্কো অফিস এ পরিকল্পনা খসড়া প্রণয়ন করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পরামর্শ সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করা হবে। এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ৩১ আগস্ট (সোমবার) গণসাক্ষরতা অভিযান ও দর্পণ এর যৌথ আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ওই ভার্চুয়াল পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নিবার্হী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল মান্নান, সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মীর হোসাইন আহসানুল কবির এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রজেষ কুমার সাহা, শিক্ষাখাত পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়নকারী দলের সদস্য খন্দকার সাখাওয়াৎ আলী এবং ইউনেসকো’র পোগ্রাম অফিসার শিরিন আক্তার। সভায় সভা প্রধান ছিলেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড. মঞ্জুর আহমেদ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড.জিয়া-উস-সবুর। সভা সঞ্চলনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে, এম, এনামুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দর্পণের প্রকল্প পরিচালক বাসন্তি সাহা।
পরামর্শ সভায় বক্তারা আরও বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন ধরে রাখা এবং স্কুল বন্ধ থাকায় আয়মূলক কাজে যুক্ত হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এরকম প্রেক্ষাপটে শতভাগ ভর্তি অব্যাহত রাখা ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান বড় চ্যালেঞ্জ হবে। টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে সরকার স্কুলের পাঠদান চালু রাখলেও এই প্রক্রিয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি। বিশেষ করে গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এসব কার্যক্রমের বাইরে থেকে গেছে। এরকম শিশুদের একটি বড় অংশ পরিবারকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন আয়মূলক কাজে যুক্ত হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে ঝরে –পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিল গ্রহণসহ এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া সহকারী অধ্যাপক এলিজা বিনতে এলাহী, দর্পণ এর নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুব মোর্শেদ, কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ,কে,এম, এমদাদুল হক, অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রতিসময় এর প্রধান সম্পাদক সাদিক মামুন, পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক, গুলবাগিচা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দিন মজুমদার, করিমাবাদ মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: আমির হোসেন, ময়নামতি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: শাহজাহান ভূঞা, চাইল্ড এন্ড উইমেন ডেভেলমেন্ট এসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক পারভীন হালিম, দক্ষিণ মজুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুধীর চন্দ্র, ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আরা বেগম এবং ক্যান্টনমেন্ট গালর্স হাই স্কুলের এসএমসি মেম্বার ফাখেরা মনসুর।
ওয়েবিনারে ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ,লক্ষ্মীপুর থেকে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অভিভাবক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
সম্পাদকঃ শাহজাহান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সাদিক হোসেন মামুন
কপি রাইটসঃ প্রতিসময় ডটকম