
সন্তানের চাকরির জন্য কোন অভিভাবককে তদবিরের জন্য কোথাও দৌঁড়াতে হয়নি, এমনকি জমিজমা বিক্রি করতেও হয়নি, বন্দক দিতে হয়নি স্ত্রীর গয়না। কিংবা ঘুষের বিনিময়ে চাকরি হবে এমন আশায় কোন সমিতি বা এনজিও থেকেও সুদের ওপর টাকা নিতে হয়নি।
মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই পুলিশের চাকরি পেয়েছেন কুমিল্লার ৭৫ পুরুষ ও নারী। তবে এই চাকরি পেতে মাত্র ১২০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এরমধ্যে ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট এবং ২০ টাকার ফরম কিনেই কুমিল্লার ৭৫ যোগ্য প্রার্থী পেলেন পুলিশে চাকরি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সের শহীদ আর আই এবিএম আব্দুল হালিম মিলনায়তনে পুলিশে চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে জানানো হয় মাত্র ১২০ টাকা খরচে ৭০ জন পুরুষ , ৫ জন
নারী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ সময় নির্বাচিতদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ফলাফল ঘোষণা করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান। লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নাম ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন, লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসান মোস্তফা স্বপন।
ফলাফলে প্রথম হন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মাসিগাড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম খোকন, দ্বিতীয় হন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জামবাড়ী গ্রামের তালেব হোসেনের ছেলে মো. রায়হান।
জেলা পুলিশের সূত্র জানায়, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ১ হাজার ৩৫১ জন আবেদনকারীর শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ে ৭টি স্তরে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় ৬৯০ জন। পরবর্তীতে লিখিত, মৌখিক পরীক্ষা শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩৯ জনে।
এরপর মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৭০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারীকে বাছাই করে নিয়োগ বোর্ড। ৭৫ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হলেও অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে ১৫ জনকে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘কোনরকম তদবির ছাড়াই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মেধার ভিত্তিতে যোগ্য ব্যক্তিদের আমরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, উত্তীর্ণরা সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্ব সঙ্গে দেশসেবার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করবে। পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষায় তারা কাজ করবেন।যেভাবে কোনো টাকা ছাড়াই চাকরি হয়েছে, সেভাবেই সেবাপ্রার্থীদেরও বিনামূল্যে সর্বোচ্চ সেবা দিবেন।’