কুমিল্লার বন্যা কবলিত ১৪ উপজেলা থেকে ধীর গতিতে নামছে পানি। ভয়াবহ বন্যাকবলিত কুমিল্লায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ডুবে থাকা অঞ্চলগুলো এখন কিছুটা দৃশ্যমান হচ্ছে। পানি কমায় মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরলেও এসব এলাকার সড়ক ও বাড়িঘরে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষত।
অন্যদিকে ত্রানসামগ্রী পেলেও চরম ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে দুর্গত এসব এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দা। বিশেষ করে গোমতী, ডাকাতিয়া, কাঁকড়ি, ঘুংঘুর নদীর বাঁধের পাশের বসতি ছাড়া কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারগুলো কখানোই এমন দুর্যোগের মুখে পড়তে হয়নি। অনেক স্বচ্ছল, মধ্যবিত্ত পরিবারও বন্যাকবলিত হয়ে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।
এদিকে বন্যার পানি যতই কমে আসছে দুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রোগবালাই বাড়ছে। ডায়রিয়া, ইনফেকশন, চর্মরোগসহ জেলার বন্যাকবলিত এলাকার অন্তত আট হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
রবিবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর, বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার ও চৌদ্দগ্রাম থেকেও ধীরগতি নামছে বানের পানি। তবে, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও লাকসামের এখনও কিছু কিছু এলাকায় পানি রয়েছে। কুমিল্লার দুর্গত এলাকার অনেক আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে কাঁচা ঘর। পাকা ঘরের আসবাবপত্রসহ বসবাসের নানা সরঞ্জামও পানিতে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রীজ-কালভার্ট।
এছাড়া কৃষি ও মৎস্য, প্রাণী সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে ফসলি জমি, মাছ, মুরগি ও গরু-ছাগলের খামার। এতে অনেক কৃষক ও খামারি পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।
কুমিল্লা-বুড়িচং উপজেলার ভরাসার, ইছাপুরা, বুড়বুড়িয়া, কালিকাপুর, ভবানীপুর সড়ক ভেঙে খাদে পরিণত হয়েছে। এ উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীণ সড়ক ঢলের পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গোপালনগর সড়কটি ব্যাপকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। দেবিদ্বার উপজেলার খলিলপুর সাইচাপাড়া সড়কটি বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। এ সড়কে এখন বড় বড় গর্ত হয়ে খাদে পরিণত হয়েছে।
জেলার নাঙ্গলকোট এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক বন্যার পানিতে তছনছ হয়ে গেছে। অধিক স্রোতের ফলে কিছু কিছু সড়ক খাল এবং বিলের মাঝে পতিত হয়ে গেছে।
Last Updated on September 1, 2024 8:52 pm by প্রতি সময়