কুমিল্লার হোমনায় আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের (তিন খুন) রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আক্তার হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার আদালতে গ্রেফতার যুবক আক্তার ট্রিপল খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।এর আগে শুক্রবার রাতে হোমনা থানা পুলিশ ঘাতক ওই যুবককে হোমনার শ্রীমদ্দি চরেরগাও গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ঘাতক আক্তার ওই গ্রামের হক মিয়ার ছেলে।
হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন জানান, হোমনা উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের জনৈক শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল একই উপজেলার শ্রীমদ্দি চরেরগাও গ্রামের আক্তার হোসেনের। একসময় পরকীয়া প্রেমিক আক্তারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাওলাত নেয় মাহমুদা। পাওনা টাকা সময়মতো না দেওয়ায় আক্তারের সঙ্গে প্রায়ই বাকবিতন্ডা হতো মাহমুদার।
ওসি আরও বলেন, গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আক্তারকে তার পাওনা টাকা ফেরত দেবে বলে বাড়িতে ডেকে আনে মাহমুদা। পরে রাতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন মাহমুদা, আক্তার, মাহমুদার ছেলে সাহাত এবং মাহমুদার ভাতিজি তিশা। খাওয়া শেষে তিশা ও সাহাত ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে ঝগড়া বাঁধে মাহমুদা ও আক্তারের মধ্যে। ঝগড়ার একপর্যায়ে মাহমুদাকে মাথায় আঘাত করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে আক্তার। পরে আক্তার চিন্তা করে তিশা ও সাহাত তো রাতে খাবার খাওয়ার সময় তাকে দেখেছে। তারা যদি খুনের কথা লোকজনকে বলে দেয়, এমন ভীতির আশঙ্কা থেকে তিশা ও সাহাতকেও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ তিনটি এক খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায় ঘাতক আক্তার।
এঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে আক্তারের বিষয়টি বারবার ফোকাস হতে থাকলে শুক্রবার রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য বেরিয়ে আসে গ্রেফতার আক্তারের মুখ থেকে। শনিবার আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ঘাতক আক্তার জবানবন্দি দেয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামে ঢাকায় চাকরিরত জনৈক শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে সাহাত এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশার (১৪) লাশ উদ্ধার করে হোমনা থানা পুলিশ।
Last Updated on September 7, 2024 7:44 pm by প্রতি সময়