বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
বাড়ছে গোমতী নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়ে হত্যা মামলায় আট আসামির রিমান্ড মঞ্জুর মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ড : ৫ দিনের রিমান্ডে শাহপরান অবশেষে ধর্ষণের শিকার সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ড : রিমান্ড শেষে কারাগারে পর্নোগ্রাফি আইনের মামলার চার আসামি মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা ডিবিতে জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না লক্ষণপুর ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসার কুমিল্লায় নিত্যপণ্যের দাম হুহু করে বাড়ছে, অস্বস্তিতে সাধারণ মানুষ ঘুরেনা কুমিল্লা রেলস্টেশনের যাত্রী ছাউনির বৈদ্যুতিক পাখা  কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা সাতে দাঁড়িয়েছে প্রথমে রাজি, আড়াই ঘন্টা পর বাচ্চু মেম্বারের ‘না’ মুরাদনগরের ট্রিপল মার্ডার: ইউপি মেম্বার বাচ্চু জবানবন্দি দেননি, চেয়ারম্যান চারদিনেও অধরা মুরাদনগরে ভেজাল শিশুখাদ্য তৈরির দায়ে লাখ টাকা জরিমানা, কারখানা মালিককে সাত দিনের কারাদন্ড মুরাদনগরের আলোচিত হত্যাকাণ্ড : ৩৮ জনের নামে মামলা, ২জন গ্রেফতার আমরা যেনতেন নির্বাচন চাই না : কুমিল্লার পথসভায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মুরাদনগরের হত্যাকাণ্ড : মামলা না হলেও গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ড : ফেসবুকে ভিডিও ছড়ানোর মাস্টারমাইন্ড শাহপরান গ্রেফতার বরুড়ায় দিঘীর পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু মুরাদনগরে পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর, শাহপরাণকে খুঁজছে পুলিশ মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা

মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রাত-গভীর হলে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতেরা হানা দেয় যানবাহনে

সাদিক মামুন
  • আপডেট টাইম বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫
  • ২৬ দেখা হয়েছে

নতুন ও অভিনব পদ্ধতি প্রয়োগ করে দুর্ধর্ষ ডাকাত চক্রের বেপরোয়া তৎপরতায় ভয়ংকর হয়ে ওঠছে রাতের মহাসড়ক। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাকাতি ও ছিনতাইপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা যাত্রী, চালক বা আরোহীদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রাত-গভীর হলে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতেরা হানা দিচ্ছে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনে। টার্গেট করা যানবাহনের চাকায় লোহার রড় বা ভারী ধাতব বস্তু নিক্ষেপের পর গাড়ির গতি কমে এলে টার্গেট করা পরিবহন বা যানবাহন আটকে যাত্রী-আরোহীদের জিম্মি করে সবকিছু লুটে নেয় ডাকাতেরা। কখনো চালক, যাত্রী-আরোহীরা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখমও হয়ে থাকেন।

 

জানা গেছে, ডাকাত গ্রুপগুলো তাদের নির্ধারিত স্থানের ১ থেকে ২ কিলোমিটারের মধ্যে গুচ্ছভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করে। সড়কের পাশে বড়গাছের আড়ালে বা ঝোপঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকে তারা। বিশেষ করে প্রবাসীদের বহনকারী গাড়ি টার্গেট করে ডাকাতির ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে, এর বাইরেও ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাসে মাঝেমধ্যে হানা দিয়ে থাকে ডাকাতেরা। রাতের মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক পিছু ছাড়ছেনা যাত্রী-আরোহীদের। এদিকে ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে রাতের মহাসড়কে পশুবাহী যানবাহনে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনার শিকার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ চালক ও বেপারীদের মধ্যে।

 

হাইওয়ে পুলিশ বলছে, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া পুরাতন ডাকাতের তালিকা রয়েছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশের কাছে। এসব তালিকা ধরে ডাকাতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে সোমবার হাইওয়ে পুলিশের পূর্ব বিভাগীয় ডিআইজি হাবিবুর রহমান খান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শৃঙ্খলা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, ডাকাতি, ছিনতাই রোধে সমন্বয় সভা করেছেন। জেলা পুলিশের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের এডিশনাল ডিআইজি মো. খাইরুল আলম ও কুমিল্লা জেলা পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খানসহ পুলিশের দুটি সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিআইজি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, মহাসড়কে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন রাখতে আন্তরিকতা ও পেশাদারিতেত্বর সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

 

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর, গজারিয়ার ভরেরচর, সোনারগাঁর মোগরাপাড়া, দাউদকান্দির জিংলাতলি থেকে ইলিয়টগঞ্জ ও চান্দিনা থেকে কোরপাই এবং চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, ফাগুনকরা, মিরশ্বানী, ফেনি সদরের লেমুয়া বাজার রাস্তার মাথা, ছাগলনাইয়া নজির ব্রিকফিল্ডের সামনে, চট্টগ্রামের মিরসরাই মিঠাছড়া বাজারের বাইপাস, সীতাকুন্ড এলাকার টেরিয়াল বাদামতল, কালুশাহ মাজার, সোনাইছড়ির বিএম ডিপোর সামনে, পন্থিছীলা, জোরারগঞ্জের বড়তাকিয়া নামক স্থানে ডাকাত চক্রের তৎপরতা রাতের চলাচলে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কুমিল্লা শহরের একটি রেন্ট-এ কারের চালক শফিক জানান, ‘রাতের মহাসড়কে চালকরা প্রায়ই ডাকাতদের শিকার হয়ে থাকে। ডাকাতেরা চলন্ত গাড়িতে লোহার রড বা পাথর জাতীয় বস্তু ছুড়ে মারে। তারপর চালক গাড়ির গতি কমালে বা দরজা খুলে নামলে সংঘবদ্ধ ডাকাতেরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আমি নিজেও মহাসড়কে ডাকাতের লোহার রড় ছুড়ে মারার ফাঁদে পড়েছিলাম। বরুড়ার আমার এক সহকর্মী ডাকাতের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিল। ডাকাতেরা সাধারণত ঢাকা থেকে আসা প্রবাসী যাত্রী বহন করা, সম্ভাব্য এমন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসগুলোকে লক্ষ্য করে রড় নিক্ষেপ করে গাড়ির গতি থামিয়ে অস্ত্র নিয়ে দল বেঁধে হামলা চালায়। কুমিল্লায় প্রাইভেটকার ও মাইক্রেবাস চালকদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েকটি ভার্চুয়াল গ্রুপ রয়েছে। কোনো চালক ডাকাতের কবলে পড়লে তাৎক্ষণিক এসব গ্রুপে খবর পৌঁছে দেওয়া হয়।’

 

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সহসভাপতি মাসুক আলতাফ চৌধুরী বলেন, ‘রাতের মহাসড়কে ডাকাতদল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মহাসড়কে বিভিন্ন কায়দায় যানবাহনে ডাকাতি নতুন কোন ঘটনা নয়, এসব ডাকাতেরাই গ্রেফতার হয়, আবার জামিনে বেরিয়ে আসে, ডাকাত সর্দাররা দলে উঠতি বয়সী তরুণ-যুবকদের যুক্ত করে। এটা সত্যি, রাতের মহাসড়কে আতঙ্ক তাড়া করে যাত্রী ও চালকদের। সামনে কুরবানীর ঈদ, আর এ সময়ে মহাসড়কে ছিনতাই-ডাকাতি-চাঁদাবাজির প্রবণতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা ছক তৈরি করে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। নতুবা মহাসড়কে চলাচলকারিদের স্বস্তির পরিবর্তে আতঙ্ক বাড়বে।’

 

এদিকে হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে ফোর্সরা।গভীর রাতে চলছে টহল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৫০ কিলোমিটার জুড়ে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক ১৪২৭টি সিসি ক্যামেরা। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাইকিং, পোস্টারিং করা হয়েছে। মহাসড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রী পরিবহনব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এ বিষয়গুলো নিয়ে হাইওয়ে পুলিশসহ জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে।

 

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা এডিশনাল ডিআইজি মো. খাইরুল আলম বলেন, ‘মহাসড়কে ছিনতাই-ডাকাতি প্রতিরোধে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট থানাগুলোও রাতে মহাসড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা দিন-রাত কাজ করছেন, কোথাও তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আমি নিজেও রাতে বের হয়ে কখনো কখনো ভোর পর্যন্ত মহাসড়কে মনিটরিং করে থাকি। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাড়ানো হয়েছে বাড়তি নজরদারি ও টহল। গাড়ি চালকদের উদ্দেশ্যে বলবো, রাতে মহাসড়কে অস্বাভাবিক কোনো শব্দ পেলে নির্জনস্থানে গাড়ি না থামিয়ে বরং দ্রুতগতিতে ওই এলাকা ত্যাগ করা উচিত। আর এই সময়টিতে গাড়িতে থাকা যাত্রীদের কেউ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কিংবা হাইওয়ে পুলিশ অথবা কাছের থানার ফোন নম্বর জানা থাকলে যোগাযোগ করবেন। আর দাঁড়ানোর প্রয়োজন হলে হাইওয়ের পাশে হোটেল, পেট্রোলপাম্প অথবা বাজার এলাকায় গাড়ি থামাতে হবে। আরেকটি বিষয়, সামনে ঈদুল আজহা, তাই কোরবানির পশুবাহী পরিবহনগুলো মহাসড়ক হয়ে রাতেই গন্তব্যে পৌঁছে, এক্ষেত্রে পশুবাহী ট্রাক বা যানবাহনের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়গুলো হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিকল্পনামতো সাজানো হয়েছে।’

# সাদিক/ প্রতিসময়/২৮/৫/২৫

Last Updated on May 28, 2025 1:52 pm by প্রতি সময়

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...

বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন।

themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!