কুমিল্লার মুরাদনগরের পাঁচকিত্তা বাহেরচর গ্রামে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী নারীর সম্মতি না থাকায় ৬দিনেও করানো যায়নি তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা। ধর্ষণের কথা উল্লেখ করে ওই নারী মুরাদনগর থানায় মামলা করলেও তিনি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অনীহা প্রকাশ করায় বাদীর ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা থেকে যাবে বলে মত পোষন করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কেবল তাই নয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় ধর্ষণ মামলাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ধর্ষণ মামলার বাদী ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য ঘটনার ৬দিনেও রাজি করানো যাচ্ছে না। এরিমধ্যে মঙ্গলবার ঘটনাস্থল বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন তিনি। ধর্ষণের প্রমাণ অনেকাংশে ডাক্তারি পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল হলেও আলোচিত এই মামলাটির বাদী যিনি অভিযোগে নিজেই পাশবিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজি হচ্ছেন না।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন জানান, ‘মামলা হওয়ার পরই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগী নারীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগমুহূর্তে তিনি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে পরীক্ষা ছাড়াই ওনাকে মুরাদনগরে ফিরিয়ে আনা হয়। আমরা ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অনেক চেষ্টা করেছি। তবে তিনি রাজি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।’
কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মামলার শুনানির সময় ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা আদালতে প্রমাণ করতে হয়। শারীরিক পরীক্ষার সনদপত্র না থাকলে বাদীর ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা থাকে।’
এদিকে পাঁচকিত্তা বাহেরচর গ্রামের ভুক্তভোগী নারীর প্রতিবেশিরা জানান, মামলার পর পুলিশ ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতাল নিয়ে গেলে এটি জানতে পেরে তাঁর স্বামী এসব পরীক্ষা করাতে বারণ করেছে। সে এখন তাঁর স্বামীর কথার বাইরে যেতে চাইছে না। দুইটি শিশু সন্তান নিয়ে সংসারটা যাতে টেকানো যায় এই চেষ্টাই করছে ভুক্তভোগী ওই নারী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর শুক্রবার ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ফজর আলীকে আসামি করে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন। এরপর শনিবার (২৭ মে) দুপুরে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় থানা পুলিশ। কিছুক্ষন পর ভুক্তভোগী নারী ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অনীহা প্রকাশ করেন। ওই নারী চিকিসককে জানিয়ে দেন, ডাক্তারি পরীক্ষাতে তার সম্মতি নেই। পরে তাকে ঘটনাস্থল মুরাদনগরে তাঁর বাপের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
Last Updated on July 2, 2025 9:29 pm by প্রতি সময়