মহাসড়কের দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ, কুটম্বপুর, মাধাইয়া, চান্দিনা, কাঠেরপুল, উপজেলামোড়, নিমসার, কালাকচুয়া, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত ফিটনেসবিহীন ‘দরজাখোলা মিনিমাইক্রোবাসের স্ট্যান্ড গড়ে ওঠেছে। তবে মূল স্ট্যান্ড ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। ভোর থেকে রাত অব্দি মহাসড়কের এসব স্ট্যান্ডে মিনিমাইক্রোবাসগুলোতে যাত্রী উঠা নামা করে। ফিটনেসবিহীন এসব দরজাখোলা মিনিমাইকোবাস বিআরটিএর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাইওয়ে পুলিশের চোখের সামনেই মহাসড়কে বড় বড় যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এধরণের দরজাখোলা মিনিমাইক্রোবাসের বেশিরভাগই সড়কে চলাচল অনুপোযোগী। নেই ফিটনেস সার্টিফিকেট, ইনস্যুরেন্স এবং রুট পারমিটের বৈধতাও। মহাসড়কে স্বল্প দূরত্বে চলাচল করলেও এসব বাহন ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে দরজা খোলা রেখেই দ্রæতগতিতে এক গন্তব্য থেকে আরেক গন্তব্যে যাচ্ছে। চলন্ত অবস্থায় ব্র্যাকে চাপ দিলে যাত্রীরা ভেতরেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এতে করে খোলা দরজা দিয়ে মহাসড়কে যাত্রীদের ছিটকে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। মহানড়কে চলাচলকারি অবৈধ এসব মিনিমাইক্রোবাসের বেশ ক’জন মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়ক থেকে সিএনজি অটোরিকশা তুলে দেয়ার পর সুজকি ও মারুতি কোম্পানীর ব্যবহার হওয়া পুরাতন মিনিমাইক্রোবাস কিনে যাত্রী পরিবহনের জন্য মহাসড়কে নামিয়েছেন।
জানা গেছে, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় এসব দরজাখোলা মিনিমাইক্রোবাসের ষ্ট্যান্ড ইজারার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে এব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, স্বল্প দূরত্বে যাত্রীদের পরিবহন সেবা দেওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দরজাখোলা মিনিমাইক্রোবাসের পরিবর্তে কম সিটের মিনিবাস চালু করা উচিত। আর স্বল্প দূরত্বের যাত্রী চাহিদা মেটানোর জন্য মিনিবাস চালু হলে এধরণের ঝুঁকিপূর্ণ দরজাখোলা যানবাহনে তখন আর কেউ ঊঠবে না। তখন যাত্রী সংকটের কারণে মহাসড়কে এগুলোর চলাচল অনেকাংশে কমে আসবে।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন সবধরণের অবৈধ যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অবৈধ, নিষিদ্ধ ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য যাত্রী চাহিদা থাকায় বেশকিছু মিনিমাইক্রোবাস দরজাখোলা অবস্থায় যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করে থাকে। যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং এসব যানবাহনে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। এগুলোর ব্যাপারেও হাইওয়ে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রায় সময় এসব যানবাহন আটক, মামলা এবং জরিমানাও করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথারিটি (বিআরটিএ) কুমিল্লা সার্কেলের সহকারি পরিচালক মো. আবদুল মান্নান জানান, দরজাখোলা মিনিমাইক্রোবাসগুলোর নাম্বারপ্লেট সঠিক থাকলেও এগুলো মহাসড়কে চলাচল অনুপোযোগী। আর এধরণের যানবাহনের মাধ্যমে যাত্রীপরিবহন ব্যবস্থা চালু বিধিসম্মত নয়। আমরা ইতিপূর্বে অভিযান চালিয়েছিলাম, কিন্তু তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই, আরও কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমাদের সমন্বিত মিটিংয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় বলেছেন, দরজাখোলা অবস্থায় মহাসড়কে যাত্রীবাহি পরিবহন হিসেবে চলাচলকারি মিনিমাইক্রোবাসের স্ট্যান্ড ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কিভাবে ইজারা দিয়েছেন, এব্যাপারে সেখানকার নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলবেন।
Last Updated on November 13, 2023 4:19 pm by প্রতি সময়