শুরু হয়েছে কোভিড-১৯ এর সেকেন্ড ওয়েব মানে দ্বিতীয় ঢেউ।এবছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বন্ধ হওয়া দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো ছুটি চলছে। আর প্রায় এক মাস পরই নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর থেকে বাড়িতে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার বিষয়ে কতটুকু মনোযোগি ছিল, আর অভিভাবকের ভূমিকা কী ছিল ? বছরের এই শেষ সময়ে মূলত এ প্রশ্নই উঠে আসবে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের জন্য। এখনো এক মাস বাকী। এসময়টাকে ঘরে সন্তানের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে হবে।আর শিক্ষার্থীদের করোনার এই দুঃসময়ে দৃঢ় মনোবল নিয়ে অধ্যবসায়ী ও সময়ানুবর্তী হতে হবে।এটি বাস্তবায়নে অভিভাবকের দায়িত্বশীল ভূমিকার বিকল্প কিছু নেই। আর এনিয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘প্রতিসময়’ এর শিক্ষা-সাহিত্য পাতায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের জন্য করণীয় (তৃতীয় পর্ব) সম্পর্কে লিখেছেন কুমিল্লা নগরীর অন্যতম কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘নজরুল মেমোরিয়াল একাডেমী’র সিনিয়র সহকারী শিক্ষক রোটারিয়ান মো. ফারুকুল ইসলাম।
বর্তমান বিশ্ব এমন একটি সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার সম্পর্কে আগে থেকে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী ছিল না।করোনা এমন একটি সংকটের তরঙ্গ তৈরি করেছে, যা কেড়ে নিচ্ছে তাজা প্রাণ।শিক্ষার ক্ষেত্রে করোনা কেবল সাময়িক প্রভাবই ফেলেনি, এটি সৃষ্টি করেছে শিখনের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি।করোনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক অস্থিরতার সঞ্চার করেছে।দীর্ঘদিন গৃহবন্দিত্ব তাদের স্বাভাবিক প্রবণতা ও বেড়ে উঠাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
করোনাকালীন শিখন ক্ষতি মেনে নিতেই হবে।জীবনের চেয়ে কোনো কিছুই অগ্রাধিকার পেতে পারে না।তবে যতটুকু ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায় সেটাই বিবেচ্য।এখন শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ সময়টাই অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে আছে।তাই এ সময়টায় অভিভাবকগণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সু-অভ্যাস গঠন করার চেষ্টা করতে পারেন।
শিক্ষার্থীরা অটো প্রমোশন পেলে তারা সার্টিফিকেট লাভ করবে কিন্তু নির্ধারিত শিখন যোগ্যতা অর্জন করবে না।শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় বাসায় বসে থাকতে থাকতে একেবারেই বোরিং হয়ে পড়েছে।কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে বাসায় পাঠ্যপুস্তকে মন না বসাটাই স্বাভাবিক। পড়তে মন চায় না, এটা চরম সত্য কথা। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীরা যাতে মানসিক কোনো সমস্যায় না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই তাদেরকে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে অভিভাবকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
১. বাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে: পাঠ্যপুস্তক ভালোভাবে শেষ করার পর বাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।তাতে শিক্ষার্থীরা অধ্যায়গুলো কতটুকু আয়ত্ব করতে পারল কিনা তা বুঝা যাবে।কোনো অধ্যায় কম আয়ত্ব হলে সেগুলোর সমস্যার সমাধান করতে হবে।
২. অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা করতে হবে: এখন সৃজনশীলের সময়। যেকোনো বিষয় বুঝে উত্তর দিতে হবে। তাই কোনো গল্প কিংবা কবিতা পড়ার পর সন্তান কি বোঝল তা তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এখন থেকেই আমাদের সন্তানরা প্রশ্ন বুঝে উত্তর দেবার অভ্যাস করালে, তারা আর না বোঝে তোতা পাখির মতো মুখস্ত করবে না।
৩. পাঠ্যপুস্তক রিডিং পড়ার অভ্যাস করাতে হবে: অধিকাংশ শিক্ষার্থীই পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায়গুলো রিডিং না পড়ে সরাসরি অনুশীলনীর প্রশ্নগুলোর উত্তর গাইড থেকে মুখস্ত করার চেষ্টা করে। অথচ অধ্যায়গুলো রিডিং পড়লে শুধু অনুশীলনীর প্রশ্ন না, অধ্যায়ের ভিতর থেকে ও কোনো প্রশ্ন করলে, সেপ্রশ্নের উত্তর দেবার দিতে পারবে।
৪. সন্তানদের কোয়ালিটি সময় দিতে হবে: সন্তানদের প্রতিদিন রুটিন মাফিক একটা কোয়ালিটি সময় দিতে হবে। তাতে সন্তানরা অনেক দিন বাসায় থাকার কারণে একঘেয়ামি অনুভব করবে না, মানসিক প্রশান্তি পাবে।
সর্বোপরি সন্তানদের এবছরের পাঠ্যপুস্তক সম্পর্কে পুরোপরি ধারণা থাকতে হবে।অন্যথায় পরবর্তী শ্রেণির পড়াগুলো বুঝতে অসুবিধা হবে।কেননা পূর্ববর্তী শ্রেণির পড়ার সাথে পরবর্তী শ্রেণির পড়ার ধারাবাহিকতা থাকে।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। এছাড়া protisomoy ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন ও বেলবাটন ক্লিক করে নতুন নতুন ভিডিও নিউজ পেতে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on November 28, 2020 11:58 am by প্রতি সময়