মেয়েটা কাঁদছে। রাতের নিস্তব্ধতায় মেয়েটার কান্না অন্যরকম এক সুর সৃষ্টি করেছে। আদিত্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটাকে কাদঁতে দেখে থমকে দাঁড়ায়।
মেয়েটার কাছে গিয়ে সে জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনি কাঁদছেন কেন?’
– ইচ্ছা হয়েছে তাই। কোনো সমস্যা?
– হুম সমস্যা আছে। আপনার কান্নায়অন্যরকম এক মায়া আছে।সেটা আমাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণকরছে।
– কী আজব! আমি কি কাঁদতেওপারবো না?
– পারবেন না কেন? আপনি কাদঁতে থাকুন,আমি বসে বসে দেখি।মেয়েটা আর কিছু বললো না। আদিত্য মেয়েটার কান্না দেখছে। কাঁদলে যে মেয়েদের অন্যরকম সুন্দর লাগে এই মেয়েটাকে দেখে প্রথম সে বুঝতে পারলো।
– আচ্ছা আর কতক্ষণ এভাবে কাঁদবেনবলুন তো?
– যতক্ষণ ইচ্ছা।
– কান্নার কারণ কি?ছ্যাঁকা খেয়েছেন নাকি?
– না, ছ্যাঁকা দিয়েছি।
আদিত্যর হাসি চেপে রাখতে কষ্ট হলো।একটা মেয়ে একটা ছেলেকে ছ্যাঁকা দিয়ে কাঁদে সেটা তার জানা ছিল না। অবশ্য এই জীবনে একটা প্রেমও তার করা হয়নি। তাই ছ্যাঁকা বিষয়েও তারকোনো অভিজ্ঞতা নেই।
– কাঁদলে ছ্যাঁকা দিলেন কেন?
– মাস্তানের মতো চুল বানিয়ে রেখেছিল। বলেছিলাম চুল কাটতে। ও কাটে নাই। তাই….
– খুব ভাল করেছেন। মাস্তানদের সাথে প্রেম করলে হিরোদের তো না খেয়ে মরতে হবে।
– দয়া করে আপনার বকবক বন্ধ করবেন? আমার অসহ্য লাগছে।
– আচ্ছা আমি চুপ।
একটা সিগারেট ধরালো আদিত্য।সেটা দেখে উঠে দাঁড়ালো মেয়েটা।মেয়েটার পিছু নিলো আদিত্য।
– আপনার বয়ফ্রেন্ডও কি সিগারেটা খায়?
– জ্বি না। আমি ছাড়িয়েছি।
– তা আমাকে ছাড়িয়ে দিতে পারবেন? এটার পিছনে অনেক টাকা চলে যাচ্ছে। কিন্তু নেশা হয়ে গেছে, ছাড়তে পারি না।
– এই আপনি চুপ করবেন?!
– আচ্ছা চুপ!
আদিত্য আর মেয়েটা পাশাপাশি হাটঁছে।গন্তব্যহীন এই হাটাঁর মাঝেই রাত বাড়ছে। জহির রায়হানের ভাষায়, হাজার বছরের পুরনো সেই রাত।
Last Updated on July 21, 2020 3:03 pm by প্রতি সময়