কুমিল্লার মুরাদনগরে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কৌশলে মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রেমিকার কাছ থেকে টাকা আদায়ের ঘটনায় থানায় দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রেমিক সজিব কুমার দাস (১৯) সহ আরো দুইজন কে আটক করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
রবিবার বিকেলে তাদের আটকের পর সোমবার (১৮ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আটক প্রেমিক সজিব কুমার দাস (১৯) মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বানীজুরি গ্রামের প্রদিপ চন্দ্র দাসের ছেলে। তার সহযোগীরা হলো কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রুহুল আমিন (১৭), মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ইস্রাফিল হোসেন অয়ন(১৫)।
পুলিশ ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার নগড়পার গ্রামের ওই কলেজছাত্রীর বাড়ির পাশে সজিব কুমার দাস ভাড়া বাসায় থাকতো। পাশাপাশি বাসা হওয়ার সুবাদে দুবছর যাবত প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে সজিব কুমার দাসের সাথে ওই কলেজছাত্রীর।
গত ২৩জুন দুপুরে কৌশলে ওই কলেজ ছাত্রীকে উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের হুমায়ন কবিরের বাড়িতে নিয়ে যায় সজিব কুমার দাস। সেখানে সজিব কুমার দাস ওই কলেজ ছাত্রীকে বাড়ির ছাদে যাওয়ার সিড়িতে নিয়ে অন্তরঙ্গভাবে সময় কাটায়।
ওই সময় পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী সজিব কুমার দাসের বন্ধু রুহুল আমিন ও ইস্রাফিল হোসেন অয়ন সহ অজ্ঞাতরা সে অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারন করে টাকা দাবী করে।
এসময় প্রেমিকা কলেজ ছাত্রীকে সজিব কুমার দাস জানায়, যদি তার বন্ধুদের টাকা না দেওয়া হয় তাহলে এ অন্তরঙ্গ মূহর্তের দৃশ্য ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে তার বন্ধুরা।
এ সময় ওই কলেজ ছাত্রীর কাছে থাকা নগদ ৭হাজার টাকা সজিব কুমার দাসের বন্ধুদের হাতে তুলে দিয়ে সেখান থেকে বাসায় ফিরে আসে সে।
এরপর গত ২৯জুন নগড়পার বাসা থেকে উত্তর ত্রিশ গ্রামে প্রাইভেটে যাওয়ার সময় প্রেমিক সজিব কুমার দাস সহ তার বন্ধুরা রাস্তায় আবার টাকা দাবী করে এবং টাকা না দিলে সে ভিডিও ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেয়। পরে ওই কলেজছাত্রী গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেইন তাদের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ১৩ জুলাই প্রেমিক সজিব কুমার দাস তার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে ভিকটিমের মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা দাবী করে।
পরে এ ঘটনাটি ভিকটিম কলেজছাত্রী তার পরিবারের কাছে জানালে ১৭ জুলাই বিকেলে পরিবারের লোকজন প্রেমিক সজিব কুমার দাসকে দাবীকৃত টাকা নেওয়ার জন্য নগড়পার চিলআউট নামে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলে। তখন সজিব কুমার দাস সহ তার সহযোগী বন্ধু রুহল আমিন ও ইস্রাফিল হোসেন অয়নকে নিয়ে টাকা নেওয়ার জন্য রেস্টুরেন্টে আসে। এসময় ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ও স্বানীয়রা তাদের আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশকে খবর দিলে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলাম তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবনে জলিল এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আটক তিন আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়েরের পর সোমবার দুপুরে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে।
Last Updated on July 19, 2022 12:56 am by প্রতি সময়