জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ মহান জাতীয় সংসদে বাতিলে সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সকল ষড়যন্ত্র চূর্ণ করে উচ্চ আদালতে ইনডেমনিটি বাতিল চ্যালেঞ্জ করে করা রিট মোকাবেলা করেছিলেন। তার সাহসী ভূমিকার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার দেখতে পেয়েছিলাম আমরা। এছাড়া, দলের দুঃসময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবার সাহস ও উৎসাহ যোগাতেন।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত সরকারি বাসভবন থেকে সাবেক আইন মন্ত্রী এবং সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি’র স্মরণে ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হলে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি ) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করে সমন্বয় এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে ভালোবাসতেন।
আব্দুল মতিন খসরুকে অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, উদার ও সর্বগুণের অধিকারী হিসেবে উল্লেখ করে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, তাঁর হঠাৎ করে চলে যাওয়া সকলের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। দেশ এবং জাতিকে দেবার মত তাঁর অনেক কিছুই ছিল। তিনি কুমিল্লার পাশাপাশি সারা দেশের উন্নয়নে যে স্বপ্ন দেখতেন তাঁর সেই স্বপ্ন এবং অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আব্দুল মতিন খসরুকে নিজের শুভাকাঙ্খী এবং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উল্লেখ করে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, আব্দুল মতিন খসরু মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সকল নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে কুমিল্লা জেলায় প্রায় মিটিং করতেন। মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমাকে টেলিফোন করে আসতে বলতেন।
এসব সভায় অত্যন্ত বিশ্লেষণধর্মী যুক্তির মাধ্যমে তাঁর মতামত প্রকাশ করতেন এবং নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টির মাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছানো সম্ভব।
ভার্চুয়াল সভায় ১৯৯৮ সালের বন্যায় বন্যার্তদের মাঝে আবদুল মতিন খসরুর সাথে মিলে ত্রাণকার্যক্রম পরিচালনা করার কথাও স্মরণ করেন মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
আব্দুল মতিন খসরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ায় অবদান রাখতে সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি তিনি আহবান জানান।
স্মরণসভায় আব্দুল মতিন খসরুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ আইকন ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তাহেরের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সোনার বাংলা কলেজের সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, ডা. আতাউর রহমান জসিম ও মরহুম আব্দুল মতিন খসরুর সহোদর কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মমিন ফেরদৌস অংশ নেন।
Last Updated on April 22, 2021 11:07 pm by প্রতি সময়