কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের কংশনগর হয়ে পাশ্ববর্তী ব্রাহ্মনপাড়ার সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম কংশনগর গোমতী সেতু। এই ব্রীজের পূর্বপাশের প্রতিরক্ষাবাঁধের দক্ষিণ অংশের নদী তীর রক্ষায় বিগত সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে হাজার হাজার সিমেন্টের তৈরী ব্লক বসানো হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে নদীর এই অংশে ভাঙ্গন শুরু হলে অনেক ব্লক নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এঅবস্থায় নদীর প্রতিরক্ষাবাঁধের পাশাপাশি নিকট দুরত্বে থাকা কংশনগর গোমতী ব্রীজটিও হুমকীর মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জিও ব্যাগভর্তি বালু দিয়ে বাঁধ মেরামতে তোড়জোড় শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩/৪ দিনের অতিবৃষ্টিতে ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারন করে। নদী তীরবর্তী মনোহরপুরের বাসিন্দা সালাম,জয়নাল,হাসনাবাদ গ্রামের খালেক, সামাদসহ একাধিক লোক জানান, কংশনগর ব্রীজের পূর্বপাশে নদীর দু’তীরই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড উভয় অংশে সিমেন্টের তৈরী ব্লক বসিয়ে বিগত সময়ে নদী তীর রক্ষার চেষ্টা করেছিল। তবে ২০১৮ সালে ব্রীজের পূর্বপাশে একটি প্রভাবশালী চক্র নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ড্রেজার বসানোর পর গ্রামবাসী প্রতিবাদ,বিক্ষোভসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কারণে বাঁধের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে প্রথমে ব্লকগুলো নদীতে তলীয়ে গিয়ে পরবর্তীতে চলতি মাসের মাঝামাঝি নদী তীরে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। স্থানীয় মনোহরপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ সামসুল হক বলেন, নদীর দু’তীরে হাজার হাজার বøক ছিল। ড্রেজার বন্ধে সেসময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নদী তীরে ভাঙ্গন হতোনা,পানিতে তলিয়ে যেতোনা হাজার হাজার সিমেন্টর তৈরী ব্লক।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙ্গনের কারনে বর্তমানে কংশনগর ব্রীজটিও রয়েছে হুমকীর মুখে। একদিকে নদীতীর অন্য দিকে ব্রীজ ভাঙ্গনের মুখে চরম আতংকিত এই এলাকার মানুষ। এদিকে প্রতিরক্ষা বাঁধটিতে ভাঙ্গন শুরু হলে নড়েচড়ে উঠে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসময় গত প্রায় ৬/৭ দিন ধরে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বালু এনে বস্তা ভর্তি শুরু করে।
জানতে চাইলে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘কংশনগর এলাকায় ভাঙ্গন কবলিতস্থানে আগেই দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। সেখানে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ মিটার প্রতিরক্ষাবাঁধ মেরামত করা হবে। ইতিমধ্যে বালু এনে বস্তাভর্তি করা হয়েছে। সেলাই শেষে ইউএনও, এমপি’র প্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের উপস্থিতিতে বাকী কাজ শেষে বালু ফেলা হবে।
তিনি আরো বলেন, নদী আমার না, এটা ডিসি’র ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত। আমরাও করি, ওরাও করে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজন নদী রক্ষায় কাজ করে। তিনি বলেন, গোমতীতে পানি নেই, তাই ভাঙ্গনের সম্ভাবনাও নেই। ব্রীজ হুমকীর বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের না। যাদের ব্রীজ তাদের জিজ্ঞাসা করেন।’
।#দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে protisomoy ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে এবং protisomoy news ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on September 29, 2020 1:42 pm by প্রতি সময়