কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবীতে এবং বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অবসরকালীন ভাতা ও সুযোগ সুবিধার কাগজপত্র লুকিয়ে রাখার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১আগস্ট) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয় কয়েকটি সংগঠন প্রতবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, ময়নাল হোসেন ব্যক্তি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় অবৈধভাবে বিদ্যালয়টির সভাপতির পদ আকড়ে রেখেছেন। ওই পদে তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও গত পাঁচ মাস সভাপতির পদ ধরে রেখে উল্টো সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরে কৃষ্ণ দেবনাথের বিরুদ্ধে গত তিন বছর আগের মিমাংসিত একটি ইস্যুকে পুঁজি করে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনেন। ময়নাল হোসেনের এ অভিযোগের কোন সত্যতা নেই বলে দাবি করেন প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তারা।
তারা বিদ্যালয়টির সভাপতি পদে অবৈধভাবে থাকা ময়নাল হোসেনকে বহিষ্কারসহ ওই পদে নির্বাচন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ কার্যকর করার দাবি জানান। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রাক্তন ছাত্র-অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আশ্রাফুল আলম সুমন, কালিপদ মজুমদার, মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া, আলমগীর কবির, সেন্টু কর, মজিবুর রহমান, রুবেল আহমেদ, আবুল খায়ের প্রমুখ।
এবিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরে কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারি মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ৫ জন অভিভাবক, ৩ জন শিক্ষক ও একজন দাতা সদস্যসহ মোট ৯ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশংকা দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত করে দেন। এতে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য আবুল হাসেমের দায়ের করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিদ্যালয়টির সভাপতি পদে দ্রæত নির্বাচন দেয়ার জন্য আদেশ দেয়। কিন্তু গত পাঁচ মাসেও হাইকোর্টের আদেশ কার্যকর হয়নি। চলতি বছরের গত ১৩ মার্চ বর্তমান কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও ময়নাল হোসেন সভাপতি পদ আকড়ে রেখেছেন।
বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক ও কমিটির সদস্য জানান, ময়নাল হোসেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন মিঠু ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরে কৃষ্ণ দেবনাথের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৭ মে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেন। তৎকালীন ইউএনও’র তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে এবং কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় ওই অভিযোগটি স্থায়ীভাবে মিমাংসা করা হয়। কিন্তু ময়নাল হোসেন উদ্দেশ্যেমূলকভাবে কমিটির সভাপতি নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য একই অভিযোগ পুনরায় দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বরাবর দাখিল করেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. আজহারুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়টির সভাপতি পদে নির্বাচনের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন রুজু থাকায় এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি দেয়া হয়নি। মামলাটি দ্রæত নিষ্পত্তির পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অগ্রগতির বিষয়ে বোর্ডকে অবহিত করার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে।
# দেশ–বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on August 21, 2020 4:15 pm by প্রতি সময়