পরিকল্পিত চুরি করার টার্গেট নিয়ে ইউএনও’র বাসায় ঢুকে চোরের দল। চুরির বিষয়টি টের পেয়ে যাওয়ায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলা করা হয়। দেশজুড়ে আলোচিত এ হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ‘মূল আসামি’ আসাদুল ইসলাম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে চুরি করতে গিয়েই এমনটি ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে নৃশংস হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ-র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই মাঠে নামে। শুক্রবার পর্যন্ত এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন-ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল ইসলাম (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস (২৮)।
আটকৃতদের মধ্যে আসাদুল, নবীরুল ও সান্টু চন্দ্র দাসকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের ছাড়া হয়েছে ওই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেন, ‘এ ঘটনার মূল আসামি আসাদুল ইসলাম। সে দাবি করেছে- পরিকল্পিতভাবে চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই ইউএনও’র বাসায় তারা ঢুকেছিল। তারা জিজ্ঞাসবাদে জানিয়েছে চুরির জন্য তারা ভেন্টিলেটর দিয়ে ঘরে ঢোকেন। তবে ওয়াহিদা জেগে গিয়ে চুরিতে বাধা দেওয়ায় তার উপর হামলা চালায়। ’
তবে গ্রেফতাররা চুরির উদ্দেশ্যেই ঘরে ঢুকেছিল বললেও ঘটনার অধিকতর তদন্ত চলবে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে তাকে ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ভোরে পুলিশ ও পাশের কোয়াটারের লোকজনের সহায়তায় আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
# দেশ–বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on September 5, 2020 4:40 am by প্রতি সময়