আর কতো সময় গড়ালে সন্তানের খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেখে যেতে পারবেন।নাকি খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা যারা করছে তাদের কারণে সন্তান হত্যার ন্যায় বিচারই পাবো না ? আক্ষেপ করে এমনভাবেই কথাগুলো বললেন কুমিল্লার একসময়কার আলোচিত চিকিৎসক ডা. লিয়াকত আলী খান ও তার স্ত্রী কুমিল্লা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার ডেইজি।এই দম্পত্তির ছোট ছেলে শাবাত খান গত বছরের ১ জানুয়ারি খুন হয়। এঘটনায় মামলা হলে প্রথমে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে।পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
দিন মাস গড়িয়ে এক বছর পার হয়েছে।কিন্তু মামলার আসামীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর বিশ্বাস রেখে এখনো আশায় আছেন খুনিরা ধরা পড়বে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।কিন্তু খুনিদের প্রেফতারে আর কতোদিন অপেক্ষা ?
কুমিল্লা নগরীর ১ নং ওয়ার্ড বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা ডা. লিয়াকত আলী খানের ছেলে শাবাত খান ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সোমবার রাতে বাসা থেকে বের হয়।এরপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর।একটি চাবির রিং ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়ায় সময় মোবাইল মানিব্যাগ কিছুই সাথে নেয় নি শাবাত।পরদিন ১ জানুয়ারী বুধবার সকাল ১১ টায় প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ডা. লেয়াকত আলী খান জানতে পারেন তার ছেলের লাশ গোমতী নদীতে ভাসছে।পরে গোমতীনদীর পালপাড়া থেকে শাবাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পরদিন ২ জানুয়ারী শাবাত খানের বাবা ডা.লিয়াকত আলী খান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শাহীন কাদির।দশ দিন পর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন( পিবিআই)এ হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হচ্ছেন কুমিল্লা পিবিআইর পরিদর্শক মতিউর রহমান।
ডা. লিয়াকত আলী খান ও রাফিয়া আক্তার ডেইজি দম্পত্তির দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে শাবাত খান সবার ছোট ছিলো।পরিবারের আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে গত এক বছর ধরে পাগল প্রায় শাবাতের মা কুমিল্লা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার ডেইজি। তিনি বলেন, আমরা ভালো নেই। আমাদের ছেলেকে হারিয়েছি। কী এক নিদারুন কষ্ট, যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে আমাদের দিন কাটছে। আমার ছেলে সহজ সরল ছিলো। গত এক বছর যাবত আমরা আইনশৃংখলা বাহিনীর দিতে তাকিয়ে আছি।কবে শাবাতের খুনিরা আটক হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আমরা আইনশৃংখলা বাহিনীকে সব ধরণের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তবুও খুনিরা অধরা।আমরা শুনেছি এই খুনের সাথে যারা জড়িত তাদের হাত অনেক লম্বা। তাই আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের আটক করতে পারছে না।
শাবাত খানের বাবা ডা. লিয়াকত আলী খান বলেন, গত ২০২০ সালের ১২ মার্চ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আমরা পুলিশকে সম্ভাব্য সব রকম তথ্য উপাত্ত দিয়েছি। তবুও কেন আসামীদের ধরতে পারছে না পুলিশ।
কুমিল্লা পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমান বলেন, আসলে তদন্ত চলছে। আমরা এখনো কোন ক্লু পাচ্ছি না। যে কারণে দেরি হচ্ছে।
তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। এই মামলার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।
Last Updated on January 2, 2021 2:29 pm by প্রতি সময়