কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের হাজী আবদুল করিম হত্যা মামলার হাজিরা দিতে আসে ফারুক ও হাসান নামের আপন মামাতো-ফুফাতো দুই ভাই। করিম হত্যার ঘটনায় জড়িত না থাকা সত্ত্বেও ফারুক তার স্বাক্ষ্যতে হাসানের নাম বলায় এবং পরে আসামী হওয়ার ক্ষোভ থেকে ফারুককে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হাসান ওই মামলায় হাজিরা দিতে এসে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই কুমিল্লা আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে ছুরিকাঘাতে ফারুককে খুন করে।
এঘটনার এক বছর আট মাসের মাথায় খুনের দায়ে মো. হাসানকে (২৫) আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আতাব উল্লাহ এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাওয়া মো. হাসান জেলার লাকসাম উপজেলার ভোজপাড়া গ্রামের লাকসাম উপজেলার ভোজপুর গ্রামের শহিদুল্লাহর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় হাসানের স্বজনরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই কুমিল্লা আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতে জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের হাজী আবদুল করিম হত্যা মামলার হাজিরা দিতে আসেন দুই আসামি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার ভোজপুর গ্রামের শহিদুল্লাহর ছেলে মো. হাসান এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের অহিদুল্লাহর ছেলে মো. ফারুক। তারা সম্পর্কে আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই। আদালতের এজলাসে ফারুককে দেখতে পেয়ে তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে হাসান। প্রাণ বাঁচাতে ফারুক বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করলে সেখানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে হাসান। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহম্মেদ হাসানকে রক্তমাখা ছুরিসহ আটক করেন। তিনি ঘটনার বাদী হয়ে ওইদিন রাতে ঘাতক হাসানের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক প্রদীপ মন্ডল একই বছরের ২৬ আগস্ট ওই আসামির বিরুদ্ধে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত নং-১ এ চার্জশিট দাখিল করেন।
কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম বলেন, কুমিল্লার আদালতে এ হত্যাকাণ্ড ছিল একটি নজিরবিহীন ও একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আসামিকে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ছুরিসহ আটক করেছিল। এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
# দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে প্রতিসময় (protisomoy) ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
Last Updated on March 8, 2021 5:35 pm by প্রতি সময়